পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ শবে বরাতের রাতে তালা বন্ধ থাকল শ্রীনগরের জামিয়া মসজিদ। ফলে নামায পড়তে পারলেন না হাজার হাজার মুসল্লি। আর এই নিয়েই তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক। মসজিদ কমিটির অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মসজিদের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে হাজার হাজার মুসল্লি শবে বরাতের রাতে মসজিদে প্রবেশ করতে পারেননি।
এই নিয়ে স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। যদিও পুলিশের পালটা দাবি, তারা মসজিদের দরজায় তালা মারেনি। পুলিশের বক্তব্য, তাদের বিরুদ্ধে ‘গুজব’ ছড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে, পুলিশের দাবি যে যুক্তিসঙ্গত নয় তা বোঝাতে মসজিদ কমিটির তরফে শবে বরাতের রাতে মসজিদের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে মসজিদটি সম্পূর্ণ জনশূন্য। একজন মুসল্লিও সেখানে নেই। আর মসজিদের গেটে তালা দেওয়া। মসজিদ কমিটির অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় তারা শবে বরাতের রাতে মসজিদে প্রার্থনা করার সুযোগ পায়নি।
প্রসঙ্গত, জামিয়া মসজিদ হচ্ছে শ্রীনগরের সবথেকে বড় মসজিদ। এখানে একসঙ্গে হাজার হাজার মানুষ নামায পড়তে পারেন। শবে বরাত, ঈদের নামায সহ মুসলিমদের একাধিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই মসজিদে হাজার হাজার মুসল্লিকে সমবেত হতে দেখা যায়। কিন্তু, ২০১৯ সালে মোদি সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর থেকে এই মসজিদের দরজায় একাধিকবার তালা লাগাতে দেখা গিয়েছে প্রশাসনকে। ফলে অজস্রবার এই মসজিদে মুসল্লিদের প্রবেশ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
আর এবার শবে বরাতের রাতে মসজিদে তালা ঝোলানোর ঘটনা সামনে এল। আর এই নিয়ে পুলিশ ও মসজিদ কমিটির মধ্যে রীতিমতো বাক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। মসজিদের ম্যানেজিং কমিটি তথা ‘অঞ্জুমান ওয়াকফ’-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, পুলিশ ও প্রশাসনের অফিসাররা বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ মসজিদ পরিদর্শনে আসেন এবং মসজিদের গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে চলে যান।
মসজিদ কমিটির আরও দাবি, তারা জানতে পেরেছে শ্রীনগরের পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের নির্দেশে মসজিদে তালা লাগানো হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের এই ধরনের পদক্ষেপ ধর্ম চারণের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে তারা মনে করে। বিষয়টি নিয়ে ট্যুইটে প্রতিবাদ করেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও।
ট্যুইটে মুফতি লেখেন, ‘এই ধরনের ঘটনা সংবিধান প্রদত্ত মোলিক অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তাকে লঙ্ঘন করেছে।’ মুফতির এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য জবাব দিয়েছে উপত্যকার পুলিশ। পালটা ট্যুইট করে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘শবে বরাতের রাতে মসজিদে মুসল্লিদের প্রার্থনা করতে না পারার জন্য তাদের কিছুই করার ছিল না।
মসজিদে নামায পড়া যাবে না, এই মর্মে কোনও নির্দেশিকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হয়নি। দয়া করে গুজব ছড়াবেন না।’ যদিও মসজিদ কমিটি পুলিশের এই দাবি মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, তারা শবে বরাতের রাতে মসজিদে নামাযের জন্য মুখিয়ে ছিল। প্রশাসনের আপত্তি না থাকলে মসজিদ মুসল্লিতে ভরে যেত, এভাবে খালি পড়ে থাকত না। প্রশাসনের অনুমতি থাকবে, আর আমরা নামাযের জন্য মসজিদে যাব না, এটা হতে পারে না।