পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ হিজাব ইসলামের অংশ নয়, কর্নাটক হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেওয়ার পরদিনই সমগ্র কর্নাটকজুড়ে পালিত হল হিজাব সমর্থনকারীদের ক্লাস বয়কট কর্মসূচি। এ দিকে কর্নাটক আমীরে শরীয়াহ ১৭ মার্চ কর্নাটক বন্ধের ডাক দেওয়ায় উত্তেজনা বাড়তে চলেছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয় এবং অনেক স্পর্শকাতর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয় রায় প্রদানের আগের দিন থেকেই। তবুও বুধবার হিজাবের সমর্থনে পথে নেমে আসে মুসলিম পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে অ-মুসলিম পড়ুয়ারাও কোথাও কোথাও যোগ দেয়।
স্কুলে গেটে এবং রাস্তার উপর ক্লাস বয়কটের ডাক দেওয়া পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ছাত্রীরা, তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ছাত্ররাও। দক্ষিণ কানাড়া ও উদুপিতে মঙ্গলবার থেকেই বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়, তবুও প্রতিবাদকারী ছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে চলে আসে। কালবুর্গি ইয়াদগির এবং শিবমোগা এলাকাতেই একই দৃশ্য দেখা যায়। বহু মুসলিম ছাত্র জোর করে টুপি পরে চলে আসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আপত্তি তুললে টুপি খুলে ফেলে তারা কিন্তু হিজাব পরিহিতরা অনড় থাকে তাদের দাবিতে।
কমলা নেহরু কলেজের ছাত্রীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায় আসা না পর্যন্ত সমস্ত পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে। হিজাব পরিহিতারা পরীক্ষায় না বসার সিদ্ধান্তে অটল। তাদের অভিভাবকরাও পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ান।
উদুপির ডেপুটি কমিশনার এম কুরমা রাফদার বলেন, সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে। ক্লাস চলেছে নির্বিঘ্নেই। আমরা সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-অভিভাবকদের অনুরোধ জানিয়েছি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য। তবে কর্নাটক আমীর শরীয়াহ মাওলানা সাগীর আহমদ খান রাশিদি ১৭ মার্চ কর্নাটক বন্ধের ডাক দেওয়ায় রাজ্যজুড়ে এবং রাজনৈতিক মহলে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। রাজ্যসভার প্রাক্তন ডেপুটি চেয়ারম্যান কে রহমান খান জানান, রাজ্যের মুসলিম রাজনৈতিক নেতারা এই হিজাব ইস্যুতে বনধের ডাক সমর্থন করছেন না।
রহমান খান বলেন, আমি মাওলানার সঙ্গে কথা বলেছি এই বন্ধের ডাক তুলে নেওয়ার জন্য। মাওলানা রাশিদি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমি অন্যান্য মুসলিম নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা বলছি। তবে বন্ধের ডাকের পিছনে বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের প্রচ্ছন্ন মদদ রয়েছে বলে জানান কে রহমান খান।
আমীরে শরীয়াহ মাওলানা রাশিদির ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে বুধবার। সেই ভিডিয়োতে মাওলানাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানাতে চাইছি যে, ধর্মের নির্দেশ মেনেও মূল স্রোতের শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত থাকতে আমরা সক্ষম। তবে বন্ধ শান্তিপূর্ণ করতে আহ্বান জানিয়েছেন এই প্রসিদ্ধ ধর্মীয় নেতা। জোর করে রাস্তা ও দোকান বন্ধ এবং কোনও মিছিল ও স্লোগান থেকে বিরত থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি। বুধবার ডাকা আমীরে শরীয়াহর এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামি-সহ বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের প্রতিনিধিরা। শান্তিপূর্ণ ও নীরব প্রতিবাদ জানাবার জন্য অনুরোধ করেছেন তারা। তাদের বক্তব্য, সরকার চাইছে এখানকার মুসলিমদের টার্গেট করতে। কিন্তু আমরা চাই, দাবি শিক্ষা ও ধর্মীয় অনুশীলন।