পুবের কলম প্রতিবেদক: বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। আর তাতে ঘুম ছুটেছে রাজ্যপালের! সেইজন্য মধ্যরাতেও উপাচার্য নিয়োগ করছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। প্রথমে ১৪ , তারপর ১৬। আরও একজন উপাচার্য নিয়োগ করে সরাসরি নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। এবার উপাচার্য নিয়োগ করলেন কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মঙ্গলবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ করা হয়েছে নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজল দে’কে। এবার তাঁকেই কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ীপদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হল। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে ফের বিতর্ক।
এদিকে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারদের বিকাশ ভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে। আর কার কথা শুনবেন এই নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন রেজিস্ট্রাররা।
সম্প্রতি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানিয়েছেন,উপাচার্যের কথা শুনে চলতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য আধিকারিকদের। তাঁরা রাজ্য সরকারের কথা শুনতে বাধ্য নন। জোর করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার ফলে সমস্যায় পড়েছেন রেজিস্ট্রাররা।
মঙ্গলবার শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি চলে রাজ্যের টাকায়। সেখানে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে একের পর এক উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, ‘উনি (রাজ্যপাল) একটাও বিল ফেরত পাঠান না। সব বিল আটকে রেখে দেন। এটা ওনার অধিকারে নেই। সংবিধান বলেছে, রাজ্য রাজ্যপালকে বিল পাঠালে সেটা ফেরত পাঠাতে হয়। আর একবারের জায়গায় দু’বার পাঠালে ওটা আইন হয়ে যায়। আশা করি এটা আমি ভুল বলিনি। আমি ব্রাত্য আর মণীশকে বলব, প্লিজ টেক কেয়ার। আমাদের এই ব্যাটেলটা ফাইট করতে হবে খুব ভালভাবে। যদি মনে হয় কারও অধিকার কেউ কেড়ে নিয়ে ফেডারেলিজমকে আঘাত করছে তাহলে আমি কিন্তু বাধ্য হব গভর্নর হাউজের সামনে ধরনা দিতে। আমি এডুকেশন সিস্টেমকে কোলাপস করতে দেব না।’
এই হুঁশিয়ারির পরও মাঝরাতে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করে কার্যত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ধন ধান্য প্রেক্ষাগৃহে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের নাম না করেই তাঁকে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।