নিজস্ব প্রতিনিধি ক্ষমতার পালাবদলের পরেই রাজ্যের প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া মানুষের ভাগ্য ফেরাতে এবং মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একাধিক সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে চালু করেছেন ‘কন্যাশ্রী’– ‘রূপশ্রী’– ‘সবুজসাথী’– ‘দুয়ারে সরকার’– ‘লক্ষীর ভাণ্ডার’ সহ একাধিক প্রকল্প। আর সেই জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন কয়েক কোটি মানুষ। যাতে আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে মানুষের ভাগ্য ফেরানোর প্রকল্পগুলি বন্ধ না হয়– তার জন্য এগিয়ে এলো বিশ্বব্যাঙ্ক। রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পগুলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাড়ে ১২ টি ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ দিল সংস্থা। আর বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ পেয়ে খুশি নবান্নের শীর্ষ আমলারা।
রাজ্যের পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে যখন একের পর এক প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী– তখন সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতা না করে উল্টে টিপ্পনি ছুঁড়ে দিয়েছে বিরোধী শিবিরের নেতারা। আর এ ক্ষেত্রে বামবিজেপিকংগ্রেস নেতারা কার্যত েকারাস সুরেই আক্রমণ করেছেন রাজ্য সরকারকে। যদিও আন্তর্জাতিক মহল মমতার উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রকল্প হিসেবে জাতিসঙ্ঘের পুরস্কার ছিনিয়ে এনেছিল মমতার স্বপ্নের প্রকল্প ‘কন্যাশ্রী’।
গত ২০২০ সালে বিধ্বংসী আম্ফানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হওয়া সুন্দরবনে নতুন করে পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। শুধু তাই নয়– গত বছর করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যেও যেভাবে মানুষের দুয়ারে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি পৌৗঁছে দিয়েছিল রাজ্য সরকার– তারও প্রশংসা করেছিল জাতিসঙ্ঘ– বিশ্বব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন। নবান্নে দুই আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভারচুয়ালি কথা বলে ‘দুয়ারে সরকার’ থেকে শুরু করে ‘চোখের আলো’ প্রকল্পের প্রশংসা করেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
রাজ্যের কোষাগারে টানাটানি থাকা সত্বেও অন্য ক্ষেত্রগুলিতে অপ্রয়োজনীয় খরচ বাঁচিয়ে– নতুন প্রকল্পের পরিকল্পনায় হস টেনেও সামাজিক প্রকল্পগুলি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যাতে সাধারণ মানুষের কাছে সুবিধা পৌৗঁছে দেওয়া যায়– তার জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে ঋণ দেওয়ার অনুরোধও জানান তিনি। গত বছরের অগস্টেই রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের তরফে ঋণ দেওয়ার বিষয় রাজ্যকে ইতিবাচক ইঙ্গিত দেওয়া হয় । গত দু’দিন আগেই রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিশ্বব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়– সামাজিক কর্মসূচিগুলি চালু রাখার জন্য রাজ্য সরকারকে সহজ শর্তে সাড়ে ১২ কোটি ডলার অর্থাৎ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই ওই টাকা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। সাধারণ মানুষের ভাগ্য ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদর্শিতারও প্রশংসা করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাঙ্কের এমন চিঠি পেয়ে অনেকটাই স্বস্তিতে রাজ্যের শীর্ষ আমলারা। বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণ পাওয়ায় লক্ষীর ভাণ্ডার সহ সামাজিক প্রকল্পগুলিকে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌৗঁছে দেওয়া যাবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়– বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণ পাওয়াকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবেই দেখছেন নবান্নের শীর্ষ আমলারা।