পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গত দেড় মাস ধরে চলছে ইসরাইল বনাম ফিলিস্তিন যুদ্ধ। নৃশংস ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞ প্রাণ কেড়েছে ১৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির, যার মধ্যে ৫ হাজারের বেশি শিশু। রাষ্ট্রসংঘ-সহ বিশ্বের বহু দেশ যুদ্ধবিরতির কথা বললেও হত্যালীলা থামাতে রাজি হয়নি নেতানিয়াহু সরকার। তবে এই প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের গাজা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী, হামাসের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে রাজি হয়েছে ইসরাইল।
কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ৷ এই যুদ্ধবিরতি হামাস ও ফিলিস্তিনিদের জয় বলে বিবেচিত হচ্ছে। টন টন বোমা ফেলে ও নিরীহ মজলুমদের হত্যা করেও গাজাকে কবজা করতে পারেনি ইসরাইলি হানাদার বাহিনী। আমেরিকা-সহ পাশ্চাত্যের ঢালাও অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থসাহায্য পাচ্ছে তারা। তারপরও নিজেদের বন্দি নাগরিকদের উদ্ধারে ক্ষুদ্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে হচ্ছে নেতানিয়াহুকে।
সপ্তাহখানেক আগেই তিনি বলেছিলেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি মানে আমাদের পরাজয় ও আত্মসমর্পণ। শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটতে চলেছে পশ্চিম এশিয়ায়।
যুদ্ধবিরতির যে শর্তগুলো উভয় পক্ষ মেনে নিয়েছে সেগুলি দেখলেই বোঝা যাবে এটা আপাতভাবে হামাসের জয়৷ ৪ দিনের যুদ্ধবিরতিতে মুক্তি পাবে ৫০ ইসরাইলি ও ১৫০ ফিলিস্তিনি৷ অর্থাৎ, এখানেও হামাসের জয়৷ এই ক’দিন গাজায় নিজেদের মিলিটারি অপারেশন বন্ধ রাখতে হবে ইসরাইলকে৷ এমনকি সালাহ উদদীন রোডে ইসরাইলি সেনা ও ট্যাঙ্কের টহলদারি বন্ধ রাখতে হচ্ছে৷ এছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে থাকছে গাজার সব এলাকায় ত্রাণের ট্রাকের প্রবেশ ও ত্রাণ সরবরাহের পরিবেশ তৈরি করা। এর ফলে গাজাবাসী ত্রাণ ও পুনর্বাসন পেতে পারবেন৷
ফিলিস্তিনে ড্রোন ওড়ানো ও হামলাও বন্ধ রাখতে হবে ইসরাইলকে৷ ৫০ জন বন্দির জন্য অনেকগুলি কড়া শর্ত মেনে নিতে হল নেতানিয়াহুকে৷ আসলে দেশের অভ্যন্তরে প্রবল বিক্ষোভ তৈরি হয়েছিল নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে৷ বিশেষ করে বন্দিদের পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে বার বার ব্যাপক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে৷ বিরোধী দলও চেপে ধরেছে নেতানিয়াহুকে৷ শেষে বাধ্য হয়েই মন্ত্রিসভার বৈঠকে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি করতে হল নেতানিয়াহুকে৷
উল্লেখ্য, গাজায় যুদ্ধ করতে ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরাইলি সেনারা। বহু সেনা নিহতের পাশাপাশি কয়েক ডজন সমরযান হারিয়েছে দেশটি।
গত কয়েকদিনে ৬০টির বেশি ইসরাইলি সাঁজোয়া যুদ্ধ ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে হামাস যোদ্ধারা। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতেই কি তবে সমঝোতার পথে যেতে হল যায়নবাদীদের, উঠছে প্রশ্ন।