পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ নিম্ন জন্মহার ও উচ্চ গড় আয়ু ইরানকে সংকটে ফেলেছে। এর ফলে সংখ্যা বাড়ছে প্রবীণদের যা দেশটিকে অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ধাবিত করছে। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষ্যে তেহরান ভিত্তিক সমাজ বিজ্ঞানী মোস্তফা শাহরিয়ারি জানান, নিম্ন জন্মহার ও গড় আয়ু বৃদ্ধির ফলে ক্রমাগত কর্মবলের কমতি দেখা দেবে যা অর্থনৈতিক পতন ডেকে আনবে। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ইরানে প্রায় ১৬ লক্ষ শিশুর জন্ম হয়েছে। তবে ২০২০ থেকে ২০২১ সালে জন্মহার একধাক্কায় অনেকটা কমে হয়েছে ১০ লক্ষ। ইরানের কাজভিন প্রদেশের ৭৬ বছয় বয়সী ব্যক্তি মুহাম্মদ ইসা জানান, জীবনে এত মন্থর জনসংখ্যা বৃদ্ধি তিনি দেখেননি। এই প্রদেশটি একসময় ক্রমবর্ধমান যুব জনসংখ্যার জন্য পরিচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘এটা দু:খজনক যে এত সুন্দর একটা দেশে এত দ্রুত বার্ধক্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ মুহাম্মদ ইসার জীবনে দু’টি বিয়ে এবং ছয় সন্তান। তবে তাঁর সন্তানদের কারোরই দুইয়ের বেশি সন্তান নেই। এ থেকেই বোঝা যায়, দেশের ট্রেন্ড কোন দিকে। পশ্চিম এশিয়া থেকে উত্তর আফ্রিকা পর্যন্ত সর্বত্র আশঙ্কাজনক হারে জন্মহার হ্রাস পেলেও ইরানের বিষয়টি অত্যন্ত কৌতূহলের। দেশটিতে যেখানে ১৯৮০ সাল নাগাদ মহিলা পিছু ৬.৫টি করে সন্তান ছিল এখন সেই সংখ্যা ১.৬। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে নিম্ন জন্ম হারের জন্য ইরান ক্রমশ পরিচিত হয়ে উঠছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই হার দেখে চিন্তিত ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কামাল হাইদারি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত বছর একটি পরিকল্পনাও প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘সাত বছর পরেও এই ট্রেন্ড চলতে থাকলে আমরা জনসংখ্যা সংক্রান্ত একটি ব্ল্যাক হোলে প্রবেশ করব যা থেকে উঠে আসতে ১৫০ বছর লেগে যাবে।’ এই সমস্যার কথা মাথায় রেখে চলতি বছর শিশুদের লালনপালন ও জনসংখ্যা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের জন্য ৪৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে ইরান সরকার।