এস জে আব্বাস, বর্ধমান: ‘প্রয়াস চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ এর উদ্যোগে শুক্রবার বর্ধমান হাই মাদ্রাসায় একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জানা গেছে, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৩৫ জন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মেধা অনুসন্ধান পরীক্ষা হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। তাদের মধ্যে সেরা ৬৫ শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয় এদিন। দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী অজ্ঞেয়ানন্দজী ,জেলা অনগ্রসর দপ্তরের আধিকারিক শামস্ তিবরেজ আনসারী, প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.আমিনুল ইসলাম,প্রয়াসের কর্ণধার ডা. গোলাম কিবরিয়া, জেলা ওয়াকফ্ পরিদর্শক মানজারুল ইসলাম, পূর্ব বর্ধমান মহিলা থানার আইসি বনানী রায়, বিশিষ্ট সমাজসেবী হাসিব আলম, সফিকুল ইসলাম ,প্রধান শিক্ষক নওশাদ আলি, দেবাশিস দাস , পাপড়ি সাহা, ডা. রমিউদ্দিন, ডা.কাউসার সেখ, ডা.সাজিদ মোহাম্মাদ, ডা. সুকুল হাঁসদা, শিক্ষিকা আয়েশা খাতুন সহ প্রমুখ বিশিষ্ট জন।
এদিনের সভায় মহারাজ অজ্ঞেয়ানন্দজী শিক্ষার্থীদের সৎ চরিত্র,আত্মবিশ্বাস ও পরোপকারী মানসিকতা গড়ে তুলে ভালো মানুষ হবার বার্তা দেন। এছাড়াও তিনি তাদের পিতা-মাতা,গুরুজন ও অতিথিদের উপর শ্রদ্ধা-ভক্তির মনোভাব গড়ে তোলার উপদেশ দেন। তিনি আরও বলেন, কোন কাজই ছোট নয়। নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজের কাজকে যথাসম্ভব সুন্দর করা প্রয়োজন। তিবরেজ সাহেব বলেন, অনগ্রসর শ্রেণীকে আমরা যদি সবাই মিলে টেনে তুলে ধরি, তবেই সমাজের সার্বিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে। এটিও তেমনই একটি প্রয়াস।
হাসিব সাহেব বলেন, একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন দিকের পারদর্শিতা লুকিয়ে থাকে । শুধু পড়াশুনোই নয় ,খেলাধুলা সংস্কৃতি চর্চা সহ অন্যান্য দিকেও সাফল্য সাফল্যের শীর্ষে ওঠা সম্ভব। তাই একটি দিকের ব্যর্থতাই শেষ কথা নয়। ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা যে কাজই করি না কেন যদি ঈমানদারির সাথে করি তাহলে যথাযথ সাফল্য আসবে ও সম্মানও বজায় থাকবে। প্রধানশিক্ষক দেবাশিস বাবু হারিয়ে যেতে বসা মেধাদের মূল স্রোতে টিকিয়ে রাখতে অভিভাবকদের আরও বিশেষ মনোযোগী হওয়ার অনুরোধ করেন।
৬৫ জনের মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছে কুকুরা অনিলাবালা হাই স্কুলের ছাত্র প্রিয়াংশু মন্ডল। তবে, আশার কথা, এই তালিকায় ২৬ জন সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীর নাম উঠে এসেছে।
এদের মধ্যে এরুয়ার বি এম ডি পি ইনিস্টিটিউশন এর ছাত্র মোহাম্মদ মহসিন পঞ্চম স্থান দখল করেছে। আরও উল্লেখ্য, এর মধ্যে কুলগড়িয়া গার্লস হাই মাদ্রাসার ছাত্রী উবাইদা রহমান ২৯ তম ও নিশ্চিন্তপুর হাই মাদ্রাসার মাসুমা রহমান ৩৭ তম স্থান দখল করে এই দুই মাদ্রাসা ছাত্রী চমকে দিয়েছে। ডাক্তারি পড়ুয়া ও ডাক্তারদের “প্রয়াস” নামক এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আগামী দিনে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের আরো মেধাবী শিক্ষার্থীদের তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালাবে এবং তারা যাতে পরবর্তী কালে হারিয়ে না যায় তার জন্য যথেষ্ট সচেতন থাকবে বলে জানিয়েছেন ডা.গোলাম কিবরিয়া। উপস্থিত বিশিষ্ট জনেরা তাঁদের কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও এই মহান উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।