পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা থাকবে কি না তা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। ৭ বিচারপতির বেঞ্চে চলছে মামলার শুনানি। মোদি সরকার চাইছে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংখ্যালঘু তকমা কেড়ে নিতে। সেই মর্মেই সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, ভারতীয় সংবিধান রচনার দায়িত্ব ছিল যে গণপরিষদের। সেখানেও আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়কে সংখ্যালঘু তকমা দেওয়া নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়েছিল আগেই। ১৯৮১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির আমলেই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সংশোধন করে একে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের তকমা দেওয়া হয়েছিল। ইন্দিরা গান্ধি বুঝেছিলেন এর প্রয়োজন রয়েছে। সংখ্যালঘুদের জন্য এমন একটি প্রতিষ্ঠান থাকার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০০৬ সালে আইন খারিজ হয়ে যায় ইলাহাবাদ হাইকোর্টে।
এএমইউ ১৯২০ এএমইউ আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯২০-এর আইনে ব্যবহৃত শব্দবন্ধ থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে এর উদ্দেশ্য ছিল মুসলিমদের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা। পরবর্তী তিন দশক ধরে এএমইউ একই নীতিতে কাজ করে। দেশে নয়া সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর অবশ্য পরিস্থিতি বদলে যায়।
বর্তমানে মোদি সরকারের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে বলেছে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তকমা অসাংবিধানিক। সংসদের আইনের মাধ্যমে যে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে, পরে তাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিশেষ তকমা দেওয়া দেশের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরুদ্ধে, দাবি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠান দেশের সম্পদ। আর তা ধর্মনিরপেক্ষ হওয়াই প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রকের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক-২০২৩ অনুযায়ী, ৯ নম্বরে রয়েছে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি। ইউনিভার্সিটি মঞ্জুরি কমিশন ও ন্যাকের হিসেবেও এ প্লাস গ্রেড পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মনিরপেক্ষ হওয়াই সাংবিধানিক বলে মনে করছে কেন্দ্র সরকার। তবে প্রশ্ন উঠেছে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে যে পথে হেঁটেছে কেন্দ্র সরকার বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও কি একই পথে হাঁটবে দেশের বিজেপি সরকার?