পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: শুক্রবার মুম্বইতে তাদের তৃতীয় বৈঠক করে ফেলেছে ইন্ডিয়া জোট। এদিকে, মোদি সরকার আবার সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে ১৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর। ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে, এক দেশ এক নির্বাচন করার প্রস্তুতির বিষয়ে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে নিয়ে কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ৮জনের সেই কমিটিতে গুলাম নবি আজাদ, অধির চৌধুরিকে রাখা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
এই ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম নেত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই আশংকা প্রকাশ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে এনে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই করে ফেলতে পারে। সম্প্রতি, কেন্দ্রের তরফে এক দেশ এক নির্বাচন করার লক্ষ্যে কমিটি গঠনের পর এই আশংকা ও জল্পনা আরও দৃঢ় হয়েছে। আর তা সত্য হলে সেক্ষেত্রে চলতি বছরের শেষে যে ৫ রাজ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা তাদের সঙ্গেই লোকসভা ভোট করে ফেলবে কেন্দ্র।
এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। আর বাংলার মতো যে রাজ্যগুলিতে বিধানসভা ভোট হয়ে গিয়েছে সেই রাজ্যগুলিকেও পুনরায় নির্বাচনের মুখে পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে ইন্ডিয়া জোটের সামনে দুটো বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। শুধু লোকসভা ভোট নয়, বিধানসভা ভোটের দিকেও আলাদা করে তাদের নজর দিতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই জোটের তো সবেমাত্র তিনটি বৈঠক হয়েছে। এখনও বেশিরভাগ কাজই অসমাপ্ত। এই পরিস্থিতিতে তারা কি পারবে বিজেপি তথা মোদি সরকারের মোকাবিলা করতে? এমনিতেও এই মুহূর্তে অনেকগুলি চ্যালেঞ্জের মুখে এই ইন্ডিয়া জোট। শুক্রবারের বৈঠকে ইন্ডিয়া জোটের লোগো প্রকাশ করার কথা থাকলেও তারা তা করে উঠতে পারেনি।
জোটের বেশকিছু নেতার লোগো পছন্দ না হওয়ায় তা প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়াও ইন্ডিয়া জোটের অভিন্ন প্রচার কর্মসূচি নিয়েও এখনও কিছু ঠিক করা হয়নি। ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে কাকে প্রধানমন্ত্রী মুখ করা হবে তা নিয়েও কিছুই প্রকাশ করা হয়নি। তৃণমূল সুপ্রিমো অবশ্য দাবি করেছিলেন, বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ ‘ইন্ডিয়া’ই। যদিও এই নিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করেছে। তাদের বক্তব্য, এতগুলো দল একজোট হল, কিন্তু নরেন্দ্র মোদির উল্টো দিকে দাঁড় করানোর মতো একটা নেতা ওদের হাতে নেই। ওরা কীভাবে মোদির মোকাবিলা করবে? এছাড়াও, মুম্বইতে যখন ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হচ্ছে তখন উত্তরবঙ্গের এক সভায় কংগ্রেসের অধীর চৌধুরি ও সিপিএমের মুহাম্মদ সেলিম তীব্র ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে।
জোটের বৈঠকে যেখানে বলা হচ্ছে, পরস্পরের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে নেওয়ার জন্য সেখানে সম্পূর্ণ উল্টো পথে হাঁটতে দেখা গিয়েছে এই দুই নেতাকে। এখন বড় প্রশ্ন, বিরোধীরা কি তাদের এই মতপার্থক্য মেটাতে সমর্থ হবে? তাছাড়া আসন সমঝোতার মতো বড় ইস্যু রয়েছে। শোনা যাচ্ছে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আসন সমঝোতা করে ফেলতে চাইছে ইন্ডিয়া জোট। কিন্তু, সেটা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নিজেদের মতপার্থক্য ও বিরোধকে উপেক্ষা করে তারা এত তাড়াতাড়ি রাজ্যভিত্তিক আসন সমঝোতা করে ফেলতে পারবে তা এই জোটের অনেক শুভানুধ্যায়ীও বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না। ফলে, এটা বলাবাহুল্য যে ইন্ডিয়া জোটের সামনের রাস্তা মোটেই মসৃণ নয়, বরং কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।