পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ কোভিড-১৯অতিমারির কারণে সারা বিশ্বে ১০ জন শিশুর মধ্যে প্রায় ১ জন শিশুশ্রমিকে পরিণত হয়েছে এবং আরও প্রায় ৯০ লক্ষ শিশু বিপদের মধ্যে রয়েছে। এমন আশঙ্কাজনক তথ্য উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইউনিসেফের সমীক্ষায়। ‘চাইল্ড লেবার গ্লোবাল এসটিমেটস ২০২০– ট্রেন্ডস অ্যান্ড দ্য রোড ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এই সমীক্ষায় আরও জানা যাচ্ছে– দুই দশকে এই প্রথম শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লড়াই থেমে যাওয়ায় ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম মুক্তির যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা ঝুঁকির মুখে। গত চার বছরে ৫-১১ বছরের শিশুদের জোর করে কাজে পাঠানোর হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমীক্ষা এক কঠোর বাস্তবকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরেছে। এই রিপোর্টে বেশ কিছু বিষয়ের সুপারিশ করা হয়েছে যার মাধ্যমে এই ট্রেন্ড থেকে বেরনো সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২০ সালের শুরুর দিকে ৬৩ মিলিয়ন মেয়ে ও ৯৭ মিলিয়ন ছেলে অর্থাৎ ১৬০ মিলিয়ন শিশু যুক্ত ছিল শিশুশ্রমে। এদের প্রায় অর্ধেক এমন সব কাজের সঙ্গে যুক্ত যা তাদের স্বাস্থ্য– নিরাপত্তা ও মানসিকতার জন্য ক্ষতিকারক। ২০১৬-২০২০ সালের মধ্যে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৮ মিলিয়নের বেশি বেড়েছে। যদিও ২০০০ সাল থেকে এই ট্রেন্ড হ্রাস পাচ্ছিল। রিপোর্ট মোতাবেক– ৬৫ লক্ষ শিশু বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত। আন্তর্জাতিকভাবে আফ্রিকার উপসাহারা অঞ্চলে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গোটা বিশ্বে যত শিশুশ্রমিক আছে তার চেয়ে বেশি শিশুশ্রমিক রয়েছে এখানে। বিপরীতে ২০০৮ সাল থেকে এশিয়া– দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয় অঞ্চলে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই রিপোর্ট আর যে তথ্যগুলি উঠে এসেছে সেগুলি হল– শিশুশ্রমিকদের মধ্যে মেয়েদের চেয়ে ছেলের সংখ্যা বেশি এবং এটাই সচরাচর ঘটে। গ্রামীণ এলাকায় শিশুশ্রমের প্রাবল্য বেশি। শিশুদের মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি কৃষিসংক্রান্ত শ্রমের সঙ্গে যুক্ত। ৭০ শতাংশের বেশি শিশুশ্রমের ঘটনা ঘটে পরিবারের মধ্যেই। রিপোর্টে বলা হয়েছে– করোনাজনিত অতিমারিতে কাজ হারিয়ে অনেক পরিবার উপার্জনের জন্য শিশুদের কাজে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে– বিদ্যালয় বন্ধ থাকাও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। আইএলও ও ইউনিসেফের সুপারিশ হল– সর্বজনীন শিশুর সুবিধার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার। আরও বেশি করে উন্নতমানের অবৈতনিক পঠন-পাঠন শিশুদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনবে।