পারিজাত মোল্লা: পুজোর মরসুমে মহানগরের পথঘাট এমনিতেই ভিড়ভাট্টা। তার উপর মিছিল হলে কি পরিস্থিতি হতে পারে, তা বোধহয় আঁচ করে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এক মিছিলের অনুমতি বিষয়ক মামলা আপাতত খারিজ করলেন।এর পাশাপাশি তীব্র ভৎসনা করলেন মামলাকারী আইনজীবী কে।শিক্ষকদের মিছিল এবং ধর্নার অনুমতির প্রশ্নে অসন্তুষ্ট হয় কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে চলে এই মামলার শুনানি। শিক্ষকদের আবেদন শোনার পর প্রধান বিচারপতি জানান , “প্রতিদিন ১৫টি করে মিছিল হচ্ছে।আর চলবে না। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস, জল কামান ব্যবহার করতে দিন।”ডিএ এবং অন্যান্য দাবিদাবা আদায়ে শিক্ষকদের একটি সংগঠন মিছিল করার পাশাপাশি বিকাশ ভবনের সামনে ধর্না দিতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানায়। মামলাটি দ্রুত শুনানির আর্জিও জানানো হয়। কিন্তু, জরুরি ভিত্তিতে মামলা শুনল না হাইকোর্ট। উল্টে এই মামলা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
এদিন তিনি ক্ষুব্ধ ভাবেই বলেন, “শিক্ষকদের স্কুলে পড়াতে হবে না, রাস্তায় নেমে পড়ুন। পুজোর আগে এই মামলার শুনানি সম্ভব নয়।”এদিন আইনজীবী শুনানির অনুরোধ জানানোর পর প্রধান বিচারপতি বলেন, “চলুন সবাইকে ব্লক করে দিই। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে না। প্রতিদিন শহরে ১৫টি করে মিছিল হচ্ছে। সংবাধমাধ্যমে দেখলাম অফিস যাত্রী, বাচ্চারা সকলকে এরজন্য হয়রান হতে হচ্ছে। এই অবস্থায় আমি আন্দোলনকারীদের প্রতি কোনও সহমর্মিতা দেখাতে পারব না। আমাকে জোর করবেন না।”মামলাকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির আরও বলেন, ”সব ভুলে শুধু রাস্তায় নেমে পড়লেই হল। অ্যাম্বুল্যান্স যেতে পারুক না পারুক, রাস্তায় লোক মরুক। সে সবে আমাদের কোনও চিন্তা নেই। জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ বলে চিত্কার করলেই হবে। পুলিশকেও লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে দিন। কিন্তু, আমি অত্যন্ত দুঃখিত স্যার।
পুজোর আগে আমি এই মামলা শুনব না।” তার পর তিনি মামলার ফাইল ফেরত দিলেন কোর্ট অফিসারকে ।মামলার শুনানি শুরু হতেই প্রধান বিচারপতি মামলাকারীদের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি । তিনি বলেন, “পড়াতে হবে না । ওরা শুধু র্যালি করুক । কোনও আর্জেন্সি নেই এই মামলার । রোজ ১৫ টা করে র্যালি । বাচ্চারা ভুগবে, অ্যাম্বুলেন্স যেতে পারবে না ।
“মামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আপনারা র্যালি করুন । পুলিশ লাঠিচার্জ করুক। কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ুক । আদালতে কিছু করার নেই । রোজ রোজ এই মিছিল শহরকে স্তব্ধ করে দিচ্ছে । সাধারণ মানুষ হেনস্তার স্বীকার হচ্ছে ।”
পাশাপাশি তিনি মামলাটির জরুরি ভিত্তিতে শুনানি করার কোনও প্রয়োজন নেই মনে করে শুনানি পিছিয়ে দিয়ে জানান পুজোর পরে এই মামলার শুনানি করা হবে ।