রেজাউল করিম ও এম আনোয়ারুল, মালদা : পড়াশোনার জগতে আবারও সাফল্য মিলল আলিশার। এবার ইংল্যাণ্ডে। এতদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন পরীক্ষায় সেরার জায়গা দখল করে এসেছেন আলিশা ইবকার। এবার ইংল্যান্ডে সেরা হয়ে নিজেকে প্রমাণ করলেন আলিশা। গত ১৭ জানুয়ারি কনভোকেশনে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত করে ওয়ারিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে সংবর্ধনা ও স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছর কমনওয়েলথ স্কলার মনোনীত হয়ে ইংল্যান্ড পাড়ি দেন আলিশা। ওয়ারিক ইউনিভার্সিটিতে অ্যাপ্লাইড থিয়েটারে মাস্টার্স কোর্সে প্রতি সেমিস্টারে প্রত্যেককে পেছনে ফেলে ৭৮ শতাংশ নম্বর ও ডিস্টিংসন পেয়ে প্রথম হন। তারপরই মিলল তাঁর এই সম্মান।
আলিশা কালিয়াচক-২ ব্লকের রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নয়াগ্রামের বাসিন্দা। বাবা হাজেরুল ইবকার বিশিষ্ট হোমিও চিকিৎসক। মা তানিয়া রহমত শিক্ষিকা।
কালিয়াচকে শিক্ষার উন্নয়নে এই দম্পতি নিরলস কাজ করে চলেছেন। আলিশার বোন আলিফিয়া ইবকার প্রেসিডেন্সি থেকে ভূতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনার পর বর্তমানে দিল্লিতে গবেষণারত।
আলিশা বরাবরই মেধাবী। ছাত্র জীবনে ফরাক্কার ইংরেজি মাধ্যমের দিল্লি পাবলিক স্কুল থেকে সাফল্যের সঙ্গে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, ছবি আঁকা ইত্যাদি সকল বিভাগেই কৃতিত্বের জন্য সেরা ছাত্রী হিসেবে এনটিপিসি’র তরফে চেয়ারম্যান ও অলরাউন্ডার অ্যাওয়ার্ড পান।
এরপর কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ভালো ফল করার পর নিজের ইচ্ছায় ইংরেজি অনার্সে ভর্তি হন। সেখানে প্রতিটি সেমিস্টারে প্রথম হন।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষায় স্বর্ণপদক, এছাড়াও সেরা খেলোয়াড়, অঙ্কন শিল্পী ও সেরা লেখিকা হিসেবে স্বর্ণপদক পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে ‘পাপা মিঞা পদ্মভূষণ’ সম্মান দেওয়া হয়। এরপর দিল্লি জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি করার সুযোগ পান। মাস্টার ডিগ্রি সম্পন্ন করেই দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি নিয়ে গবেষণামূলক পাঠ্যক্রম শুরু করেন। ইতিমধ্যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন ২০১৭ সালে। কিন্তু পড়াশোনার অদম্য ইচ্ছা ও বিশ্বকে জয় করার স্বপ্ন থেকে বিরত হননি কখনও। গত বছর তিনি কমনওয়েলথ স্কলারশিপে মনোনীত হয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন। সেখানেও সেরা হয়ে নিজেকে প্রমাণ করলেন আলিশা।
আলিশা ইবকার জানান, ‘বিদেশের মাটিতে সেরা হওয়ার আনন্দটাই আলাদা। ইচ্ছে ছিল ভালো রেজাল্ট করার। সেই দিক থেকে পরিশ্রম সার্থক। খুব ভালো লাগছে।’