পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: : নাগাল্যান্ডে চোর অপবাদে পিটিয়ে খুন মুসলিম যুবক। ঘটনায় ধৃত ৬ জন। ক্ষতবিক্ষত, রক্তাক্ত অবস্থায় যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, তাকে মৃত বলে জানানো হয়। মৃতের নাম ইকামুল হাসান। পুলিশ বুধবার জানায়, ডিমাপুর জেলায় চুরির সন্দেহে ২০ বছর বয়সী এক মুসলিম যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।মৃত যুবকের নাম ইকামুল হাসান। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মৃতের শরীরের ভয়ঙ্কর বেশ কয়েকটি কিছু ছবি প্রকাশ্যে এসেছে।
মঙ্গলবার পিআরও-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জানতে পারে, মারধরের পর হাসানকে কিছু লোক চুমুকেদিমা পঞ্চায়েত কক্ষে আটকে রাখে। পুলিশ অচেতন্য অবস্থায় যুবককে উদ্ধার করে। তাকে ডিমাপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে জানান। ঘটনায় মাসিসেতুও থেপা, কেনেলি চালি, লুউসভিলি ডোজ, জব ভেনুহ, কেখরিসেলি লিজেটসু এবং নির্মল সাইকিয়া নামে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় ডিমাপুর মুসলিম কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুর রহমান জানান, ঘটনাটি জানতে পেরে তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চুরির সন্দেহে এক নিরীহ যুবকের উপর দুষ্কৃতীরা নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। হাসান অসমের কার্বি আংলং জেলার বোকাজান শহরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। বাবার নাম কালক হোসেন। মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
মৃত্যুর আগে ইকামুল হাসান, তার নিজের নাম ঠিকানা জানিয়ে গেছে। অহিদুর রহমান আরও জানান, আমরা খুবই শোকাহত। এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশা রাখি না।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। কিন্ত কি কারণে এই খুন তা স্পষ্ট নয়। ইকামুল চোর না নির্দোষ তাও জানা যায়নি। আর সব থেকে বড় কথা, ইকাবুলের কোনও কথা শুনেই দুষ্কৃতীরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান সময়ে একের পর এক নারকীয় ঘটনায় উত্তপ্ত দেশের বাতাবরণ। কোথাও দলিতদের শরীরে মলমূত্র ত্যাগ করা থেকে জুতো চাটানো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে, গরু চোর থেকে চুরির অপবাদে মুসলিম যুবককে মারধর। প্রায়শই প্রকাশ্যে আসা ঘটনাবলি থেকে দেখা যাচ্ছে মানুষ এখন বড়ই অসহিষ্ণু, আইনের তোয়াক্কা না করে নিজের হাতেই আইন তুলে নীতি পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। নির্যাতনের পারদ মাত্রা ছাড়ালেও এখনও এই ধরনের অমানুষিক নির্যাতন করে খুনের ঘটনায় কঠিন শাস্তির কথা শোনা যায়নি। আর আশ্চর্য্যের বিষয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে এই ধরনের ঘটনা প্রায়শই ঘটতে দেখা যাচ্ছে।