শুভায়ুর রহমান: মাগরিবের আযান কানে ভেসে আসতেই ইফতার শুরু। হোমিওপ্যাথিকের এমডিপড়ুয়া রুমা খাতুন, রেশমিয়ারা খাতুনের পাশেই ইফতার সারছেন আন্দামান নিকোবর থেকে আগত বীণা দাস, রিত্তিকা পাধি। বীণা দাস বা রুমা খাতুনরা জানালেন, আমাদের মধ্যে শুধু আজ ইফতার বলে নয়। যতদিন একসঙ্গে থাকছি, মিশছি খাবার ভাগ করে খাওয়া সবই চলে।
আবার লক্ষৌ-এর ইয়াসের আরাফত, পশ্চিমবঙ্গের ওয়াশিম রেজা, সহিদুর রহমানদের সঙ্গে কলকাতার সৌম্যদীপ মাইতিরা সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে বিবিধের মাঝে মিলন ঘটাল।
স্থান-কলকাতার ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডে অবস্থিত রাজ্য সরকারের হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সৌজন্যে, ডিএন দে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘ইফতার ই মজলিশ’। যখন কিছু মানুষ ধর্মের নামে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছেন। অসিষ্ণুতার মাঝে যেন একদল ডাক্তার ও ডাক্তারি পড়ুয়াদের আয়োজন শান্তির হিমেল বাতাস বইয়ে দেওয়ার আশা জাগায় বৈকি বলছিলেন একজন অমুসলিম পড়ুয়া। আয়োজকদের মধ্যে, ত্বহা ইয়াসিন জানালেন, এখানে মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান সবাই রয়েছে।
মঙ্গলবার ডিএন দে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে ইফতারের মজলিশে উপস্থিত ছিলেন, রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান, দৈনিক ‘পুবের কলম’-র সম্পাদক তথা রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, স্বামী তৎপরানন্দ মহারাজ, ডিএন দে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ড. শ্যামল কুমার মুখার্জি, অধ্যাপক শাখাওয়াত হোসেন, কলকাতা মেডিকেল কলেজের ডাক্তার খন্ডকার ফরিদউদ্দিন প্রমুখ। পুবের কলম সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান বলেন, এই মাস আল্লাহ-র নিকটবর্তী হওয়ার আপনারা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করছেন কিন্তু অনেক বড় কাজ আল্লাহর কাছে। ধর্মগুরুরা যেটা দিয়ে গেছেন তা মানলে পৃথিবী শিশুর বাসযোগ্য হবে। রমযান মাসে আত্ম নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা পাচ্ছি। এই মাসে আল্লাহ-র ভীতি যেন বাকি এগারো মাসে আমাদের মধ্যে অণুরনিত হয় বলে তিনি জানান।
মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান বলেন, ইফতারেû ত্যাগের মেসেজ রয়েছে। শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেয়। ধর্মকে জানলে অন্য ধর্মের প্রতিও সম্মান আসবে বলে মন্ত্রী জাভেদ খান মন্তব্য করেন। এদিন ডাক্তার ও ডাক্তারি পড়ুয়াদের আগমনে ইফতারের আয়োজন স্থল মুখরিত হয়ে ওঠে। হোমিওপ্যাথিকের সমস্তবিভাগের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ফুল ও আলোকসজ্জায় চোখ ধাঁধানো পরিবেশে জাঁকজমক হয়ে ওঠে। বাংলায় মিলে যায় অন্য রাজ্য, অন্য ধর্মের পড়ুয়াতে। কারণ বাংলা তো সম্প্রীতির ও সংস্কৃতির।