পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আজ ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে দুর্নীতি ইস্যুতে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, কাজ করতে গেলে ভুল হয়। রাস্তায় চলতে গেলে হোঁচট তো খেতেই হবে। ভুল হলে শুধরে নিতে হবে।আইন-আইনের পথে চলবে।
এদিন তিনি সংবাদ মাধ্যমের বিষয়ে সরব হয়ে বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলি বেশি দেখবেন না। ওরা সারাক্ষণ তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলে। আমি যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম একটা আরশোলা বের হলেও বলত ‘আরশালা’ বেরিয়েছে। আর এখন বিছানাও নোংরা। সেটা কতবার দেখায়?’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের বুদ্ধি ব্যবহার করুন। টিআরপি বাড়াতে ভেজাল খবর দেখায়। সব তথ্য সত্য নয়। আমাদের ব্রেনে অনেক কোষ আছে। খারাপ চিন্তা হলে তা খারাপ হয়ে যায়। তাই কোষ ভালো রাখতে ভালো কথা চিন্তা করতে হবে বলেও জানান মমতা।
সোমবার শিশু দিবস উপলক্ষে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে থেকে মুখ্যমন্ত্রী সোমবার শিশু দিবস উপলক্ষে দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরত পড়ুয়াদের বিনামূল্যে ট্যাব কেনার অর্থ দেওয়ার কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘লোভ করতে যেও না। আজ আছি কাল নেই। নিজে দাঁড়িয়ে বলবেন আমার দাম কোটি-কোটি টাকা থেকে বেশি। মনুষত্বের দামের বিকল্প হয় না।’ ‘আগে স্কুল কলেজে কম নম্বর দিত। এখন কেউ ৮৮ কেউ ৯৯ পাচ্ছে। আমি ক্ষমতায় আসার পর বললাম সিবিএসসি-আইসিএসসি তে ছেলেমেয়েরা অনেক নম্বর পায়। আমি বললাম, প্রতিযোগীতায় বেশি নম্বর না দিলে আমাদের ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে পড়বে। সেই জন্য বললাম বাড়িয়ে দাও নম্বর। যাতে সারা বিশ্বে আমাদের ছেলে-মেয়ের নজরকাড়তে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘আমাদের শিক্ষকরা ভালো পড়ান। তাই ছাত্র-ছাত্রী ভালো তৈরি হচ্ছে। তাই স্মার্ট ফোন নিয়ে সারা পৃথিবী খুঁজবেন। আপনার যা চাই সব তথ্য পেয়ে যাবে। একটা জায়গা থেকে তথ্য নেবেন না। ক্রশচেক করবেন। কোনও ফেক-ভেক টিউব নয়, যে সত্য তথ্য দেবে তার ওপরেই ভরসা করবেন’। নেতাজি ইন্ডোর থেকেই ফের বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি ফের বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেন, ‘বাংলায় খেয়ে, বাংলায় পড়ে দিল্লিকে বলছে বাংলায় টাকা দিও না। আমার বয়েই গেছে টাকা নিতে। বাংলা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। দিল্লির মনে রাখতে হবে আমাদের আত্মসম্মান রয়েছে। এটা ছিনিয়ে নিতে দেব না।’
সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১১ থেকে ২০২২ এর মধ্যে ৩০টি বিশ্ব বিদ্যালয় করেছি। আমরা আইএস-আইপিএস ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। ৫১টি নতুন কলেজ, ৭ হাজার নতুন স্কুল, ২ লক্ষের বেশি শ্রেণিকক্ষ তৈরি হয়েছে, সাঁওতালি মিডিয়াম তৈরি হয়েছে। ৮০ লক্ষের বেশি কন্যাশ্রী পেয়েছেন, ১ কোটির বেশি ছেলে সবুজ সাথীর সাইকেল পেয়েছেন। করোনার সময় যখন ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারত না, তখন অন লাইনে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৭ লক্ষ ছেলেমেয়ে টাকা পেয়েছেন ইতিমধ্যে। আজকে বাড়ি গিয়েই দেখবেন ১০ লক্ষ ছেলেমেয়ের ব্যাঙ্কে টাকা ঢুকে গিয়েছে।’
এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। দার্জিলিং থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন জিটিএ সদস্যরা।