পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: : কিডনি প্রতিস্থাপন জুড়ে দিল দুটি মানুষের হৃদয়। আর্থিক কারণে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে জীবনীশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন কেরলের ৪৯ বছরের জোজোমন। ঠিক সেই সময় তাঁর পাশে বন্ধুর মতো এসে দাঁড়ালেন যাজক জর্জ পাজেপারাম্পিল। নিজের কিডনি দান করে জোজোমনকে নতুন জীবন দান করলেন জর্জ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, যাজক জর্জ জোজোমনকে অন্ধকারের পথ থেকে আলোর দিশা দেখিয়েছেন, বাঁচতে শিখিয়েছেন। অস্ত্রোপচারে সফল হয়েছে কিডনি প্রতিস্থাপন। দুজনেই সুস্থ আছেন।
ডায়াবেটিস রোগে কিডনি বিকল হয় জোজোমনের। ডায়ালিসিস চলে। এই অবস্থায় চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, ডায়ালিসিস করে সুস্থ হওয়া সম্ভব নয়, কিডনি ট্রান্সপ্লানেট, বা প্রতিস্থাপন করাতে হবে। কিন্তু আর্থিক অক্ষমতার কারণে অসহায় অবস্থায় পড়েন জোজোমন। তাঁর স্ত্রী কিডনি দিতে চাইলেও তা ম্যাচ করেনি। এই অবস্থায় উদ্বেগ বাড়তে থাকে জোজোমনের পরিবারে।
৪৯ বছরের জোজোমনের অবস্থার কথা থ্যালাসেরি ডায়োসিসের যাজক নিয়ে গঠিত একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে কানে যায় ৩৬ বছর বয়সী ফাদার জর্জ পাজেপারাম্পিলের কাছে। জর্জ কেরলের মানুষের কাছে ভাক্কাচান নামেই পরিচিত। বালাল পঞ্চায়েত সদস্য জোজোমন কাসারগড়ের কোনাক্কাদে একটি অক্ষয় কেন্দ্র চালাতেন। তার চিকিৎসা ও আর্থিক অবস্থার কথা জেনে কোনাক্কাদ চার্চের ভিকার জোবিন জর্জ এবং বালাল পঞ্চায়েত সদস্য বিন্সি, জোজোমনের চিকিৎসার জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। যাজক জর্জ থ্যালাসেরি ডায়োসিস থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে জোজোমনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ২১ জুলাই জোজোমনকে রাজাগিরি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২৮ জুলাই আলুভার রাজাগিরি হাসপাতালে জোজোমনের কিডনি সফল প্রতিস্থাপন হয়।
বিশিষ্ট কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাঃ জোস থমাসের তত্ত্বাবধানে এই প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। এই মেডিকেল টিমের মধ্যে ছিলেন ডাঃ বালাগোপাল নায়ার, ডাঃ স্নেহা পি সাইমন, ডাঃ অপ্পু জোস, ডাঃ শচীন জর্জ এবং ডাঃ শালিনী রামকৃষ্ণান সহ অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগ।
রাজাগিরি হাসপাতালের ডিরেক্টর, ড. জয় কিলিকুনেল সিএমআই বলেন, জোজোমনের জীবনে যাজক জর্জ এক রামধনু হিসেবে এসেছেন। জর্জের শান্ত, নম্র ব্যবহার, জোজোমনের উদ্বেগ কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছিল। সত্যিকারের এক মানুষের ধর্ম পালন করলেন থ্যালাসেরি ডায়োসিসের যাজক জর্জ পাজেপারাম্পিল।