পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : বিলকিস কাণ্ডে অভিযুক্তদের ফাঁসিকাঠে ঝোলানো উচিৎ, বিস্ফোরক নির্ভয়ার মা। স্বাধীনতা দিবসের দিন গুজরাত সরকারের সিদ্ধান্তে আদালত মুক্তি দেয় বিলকিস কাণ্ডে ১১ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামিকে। এবার এই নারকীয় কাণ্ড নিয়ে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির বিরোধিতায় সরব হলেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। এদিন আশাদেবী বলেন, অভিযুক্তদের ফাঁসিকাঠে ঝোলানো উচিৎ। মোজো স্টোরিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এইভাবে বিলকিস কাণ্ড নিয়ে সরব হলেন আশাদেবী।
এই সাক্ষাৎকারে আশাদেবী বলেন, ‘ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া কখনই উচিৎ নয় বলেই আমি মনে করি। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলে সারাজীবন জেলে থাকতে হবে। কারণ, এটি কোনও মামলা বা পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এই মামলা একজন নারীর নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত। যদি এই ধরনের কাজ করার পরে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে সমাজে এর ভুল বার্তা যাবে’।
আশাদেবী সাক্ষাৎকারে সমাজ ব্যবস্থার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘এই মামলা ছাড়াও রাজ্যের গ্রাম, শহরের লক্ষ লক্ষ মহিলা ধর্ষণের মতো ঘটনায় তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পরিবার, সমাজের চাপে তারা সেই লড়াই থেকে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ধর্ষক খুনিদের মুক্তি দেওয়া কখনই উচিৎ নয়। যেভাবে ধর্ষণ ও খুনের আসামিদের মিষ্টি ও মালা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে তা শুধু নির্যাতিতা বিলকিসের প্রতিই ব্যঙ্গ বা বিদ্রুপই নয়,সব নির্যাতিতাদের প্রতি উপহাস করা হচ্ছে।’
আশাদেবী তাঁর সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়েই বিলকিস কাণ্ডে এই রায় পুণর্বিবেচনা করার জন্য গুজরাত সরকারের কাছে আবেদন জানান।
বিলকিস কাণ্ডে আসামিদের মুক্তি প্রসঙ্গে সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক সি কে রাউলজিকে বলতে শোনা যায়, ‘ওরা ( মুক্তি প্রাপ্ত আসামিরা) ব্রাহ্মণ, সংস্কারি। জেলে ওদের ব্যবহার ভালো ছিল, তাই তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’
সেই প্রসঙ্গে টেনে এনে নির্ভয়ার মা আশাদেবী বলেন, ‘ যদি ওরা এত সংস্কারি হয়, তাহলে ধর্ষণের মতো এই জঘন্য কাজ ওরা করল কিভাবে?’। আমাদের সংবিধানে কি লেখা আছে একজন ধর্ষক যদি বাহ্মণ পণ্ডিত হয়, তাহলে সে ধর্ষণের মতো করে ছাড় পেয়ে যেতে পারে?
আশাদেবী স্পষ্ট করে বলেন, ‘এত জঘন্য কাজ করলে তুমি যেই হও তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।’
আশাদেবী সাক্ষাৎকারে জানান, বিলকিসের রায়ে শুনে আমি খুব মর্মামত হই। আমি বিলকিসের পরিবারকে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেছিলাম। যারা একজন অন্তঃসত্ত্বাকে ধর্ষণ করল, তার পরিবারের সদস্যদের খুন করল তাদের অবশ্যই ফাঁসি হওয়া উচিৎ।