পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর অধ্যক্ষের বড় কন্যা। চিকিৎসক বোনের পরামর্শে এগিয়ে এসেছিল কলেজের অ-চিকিৎসক বেয়াড়া পড়ুয়ারাই। শেষ পর্যন্ত তাদের উদ্যোগেই জন্ম নিয়েছিল ফুটফুটে এক নবজাতক। ‘থ্রি ইডিয়েট’ সিনেমায় দেখা গিয়েছিল এই দৃশ্য। সেলুলয়েডের সেই দৃশ্যের অনুরূপ না হলেও অনেকটা তারই প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে কর্নাটকের চিত্রদুর্গ জেলার এক সরকারি হাসপাতালে। তবে বাস্তবের এই ঘটনায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার অভিযোগ উঠছে।
গত সপ্তাহে কর্নাটকে ভারী বৃষ্টির পরই এই হাসপাতালের বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকেই চলছে বেহাল দশা। চিত্রদুর্গা জেলার মোলাকালমুরুতে অবস্থিত একশো বেডের এই সরকারি হাসপাতালে নেমে এসেছে অন্ধকার। হাসপাতালের কর্মীরা টর্চ জ্বালিয়েই করছেন কাজ। মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে রোগীদের দেখছেন চিকিৎসকরা। গরমে ঘেমে-নেয়ে এক হলেও, জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মোমবাতি, টর্চ, মোবাইলের আলোতেই রোগীদের পরীক্ষা থেকে প্লাস্টার বা ক্ষতস্থানে সেলাই করা হচ্ছে। বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে অপারেশনও। অভিযোগ, চিকিৎসক ও রোগীদের হাজারো সমস্যার পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনারেটরের ব্যবস্থা করেনি।
কিন্তু ভোটের মরসুমে এই সমস্যায় লেগেছে রাজনীতি রং। সোশ্য়াল মিডিয়ায় হাসপাতালে মোমবাতি, টর্চ জ্বেলে চিকিৎসার ছবি পোস্ট করে সিদ্দারামাইয়া সরকারকেই দুষছে বিজেপি। অন্যদিকে স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক এনওয়াই গোপালকৃষ্ণের দাবি, হাসপাতালের কাছে ১০০ কিলোওয়াটের জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু ১০০ বেডের হাসপাতালে কমপক্ষে ২৫০ কিলোওয়াটের জেনারেটর প্রয়োজন। হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক বিজেপির সঙ্গে যুক্ত, ভোট আবহে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এক সপ্তাহ ধরে সমস্যার কথা জানাননি এবং জেনারেটরের আবেদনও করেননি। বিধায়ক হাসপাতাল পরিদর্শনেও যান। সেখানে চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করতেও দেখা যায়। বিধায়ক অভিযোগ করেন, হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়ায় ওই চিকিৎসক গালিগালাজ করেছেন। পরে ওই চিকিৎসক ক্ষমা চেয়ে নেন বলেও জানা গিয়েছে। ঘটনা যায় হোক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে চিকিৎসা নিতে যাওয়া আমজনতা। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে কর্তব্য পালন করতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।