করোনা তৃতীয় ঢেউ নিয়ে একদিকে যেমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে– তেমনি করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে বাঁচাতে সরকারও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির মতো হোমিওপ্যাথিতেও সারতে পারে করোনা। এক সাক্ষাৎকারে এনিয়েই নানান কথা শোনালেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. প্রকাশ মল্লিক। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন পুবের কলম প্রতিনিধি আসিফ রেজা আনসারী
পুবের কলম করোনা তৃতীয় ঢেউ নিয়ে নানান কথা শোনা যাচ্ছে– একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হিসাবে বিষয়টাকে কেমন চোখে দেখছেন।
প্রকাশ মল্লিক করোনার থার্ড ওয়েভ বা তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে সরকারের তরফে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে– তবে আমরাও হোমিওপ্যাথিক ওষুধের মাধ্যমে করোনা প্রতিহত করতে পারব বলে আশা ব্যক্ত করতেই পারি। কারণ– করোনা হচ্ছে একটি আরএনএ ভাইরাস– আর আমাদের হোমিওপ্যাথিতে আরএনএ বলে একটি ওষুধ আছে– যেটা ব্যবহার করে শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ে। এটা পরীক্ষিত। ফলে থার্ড ওয়েভ নিয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তাতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।
পুবের কলম শিশুদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
প্রকাশ মল্লিক : আমাদের মনে রাখতে হবে এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে ফলে শিশুদের নানান ধরনের অসুখ দেখা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিতে সিম্পটম নির্ভর চিকিৎসা করলে রোগ-ব্যাধি থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। শিশুদের খেলাধুলা করতে দেওয়া ও শরীরচর্চা করালে ভালো। সকলেই মাস্ক পরুন। তবে ৫ বছরের নিচের শিশুদের মাস্ক পরার দরকার নেই। শিশুদের কোনও অসুখ-বিসুখ হচ্ছে কিনা– তার লক্ষণ দেখেই চিকিৎসা করতে হবে। অসুখ হওয়ার পর লক্ষণ দেখে সঠিক চিকিৎসা করালেই হবে।
পুবের কলম যেসব শিশু মায়ের দুধ পান করে– তাদের যত্ন নেওয়ার ব্যপারে যদি কিছু বলুন।
প্রকাশ মল্লিক : হ্যাঁ– শিশুদের সঙ্গে তার মায়েদের একসঙ্গে থাকা বা দুগ্ধপান করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। মায়ের দুগ্ধপান শিশুদের জন্য ১০০ শতাংশ নিরাপদ– তবে তার মায়ের কোনও মারাত্মক অসুখ থাকলে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে আলাদা থাকা যেতে পারে। শিশু অস্বাভাবিক কিছু করছে কিনা– সেগুলি খেয়াল রাখতে হবে– বেশি বেশি করে যত্ন নিতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
পুবের কলম করোনাকালে হোমিওপ্যাথির ভবিষ্যৎ নিয়ে কী বলবেন?
প্রকাশ মল্লিক : সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব চিকিৎসা পদ্ধতি পাল্টাচ্ছে। ফলে নতুন নতুন ওষুধ– পদ্ধতি ইত্যাদি আবিষ্কার। একইভাবে হোমিওপ্যাথি নিয়ে গবেষণা চলছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে মানুষের আরও আগ্রহ দেখা দিচ্ছে। আমাদের চিকিৎসা পদ্ধতিতে ইমিউনিটি বাড়ানোর কিছু ওষুধ আছে– যেগুলোর মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধে শক্তি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করি। ব্যক্তিগতভাবেও আমি কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগ করে বাস্তবসম্মত সাফল্য লাভ করেছি। হোমিওপ্যাথি নিয়ে ভারত সরকারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। আয়ুষমন্ত্রক এ নিয়ে কতকগুলি গাইডলাইনও তৈরি করেছিল– যার মাধ্যমে সুফল পাওয়া গিয়েছে।
পুবের কলম করোনা ভ্যাকসিন বা সাইড এফেক্ট নিয়ে হোমিওপ্যাথির কোনও চিকিৎসা আছে?
প্রকাশ মল্লিক : শুধু করোনা নয়– যে কোনও ভ্যাকসিন নিয়ে কারও সমস্যা দেখা দিলে আমাদের কতকগুলি ওষুধ রয়েছে। ভ্যাকসিনের সাইড এফেক্ট কাটাতে হোমিওপ্যাথি সক্ষম– এতে কোনও সন্দেহ নেই। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে যদিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তবে সবাইকে পরামর্শ দেবো-টিকা নিন– স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সচেতনতা করোনা রুখতে বড় অস্ত্র।