পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ এক ‘গুরুতর’ সাইবার অপরাধের বিষয়ে পুলিশকে নোটিস পাঠিয়েছেন দিল্লি কমিশন ফর ওম্যানের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল। ‘সুল্লি ডিল অফ দ্য ডে’নাম দিয়ে মুসলিম মেয়েদের অনুমতি না নিয়েই তাদের ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে অনলাইনে। ব্যবহার করা হচ্ছে ‘গীতহাব’নামে একটি হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম । শয়ে শয়ে মুসলিম মেয়েদের ছবি কে বা কারা অনলাইনে আপলোড করছে তা জানা যায়নি। ‘সুল্লি ডিল’নামের এই অ্যাপটিতে ছবি দিয়ে মেয়েদের নিলামে চড়ানো হচ্ছে। অনেকে তাদের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে ‘ডিল অফ দ্য ডে’শেয়ার করার পর এই অ্যাপটির খবর নজরে আসে। তারপর যদিও গীতহাব ওই ‘ডিল’-এর বিষয়টি সরিয়ে দিয়েছে। ওই নোটিসে ডিসিডব্লিউ প্রধান স্বাতী মালিওয়াল এফআইআরের কপি, চিহ্নিত ও গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের বিস্তারিত বিবরণ চেয়েছেন পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের কাছে।
এই বিষয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল এডিটর্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া। ইজিআই ট্যুইট করে জানিয়েছিল, মহিলা সাংবাদিক পেশাজীবী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাদের ছবি অনলাইনে পোস্ট করা হচ্ছে এবং ভীষণ অশ্লীলভাবে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। নিলামে তোলা হচ্ছে তাঁদের। এই ধরনের ক্রিয়াকলাপকে সমালোচনা করে ইজিআই। তারপরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এতদিন।
প্রসঙ্গত মুসলিমদের অসম্মান করতে এই সুল্লা বা সুল্লি নামে ডাকা হয়। গীতহাব একটি হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম। সেটি যে কেউ পরিচয় গোপন করে ব্যবহার করতে পারে। ‘সুল্লি ডিল’ নামের অ্যাপটিও সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে গীতহাবে। পেশায় বিমানচালক হানা মহসিন খান জানান, অ্যাপটি খুললে আপনাকে ‘ফাইন্ড ইওর সুল্লি ডিল অফ দ্য ডে’ তে ক্লিক করতে বলা হবে। তারপর হরদম মুসলিম মেয়েদের ছবি দেখাতে শুরু করবে। ছবিগুলি মূলত ওই মেয়েদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া। নিজের ছবি এখানে দেখে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম।’ তিনি আরও জানান যে, এই ঘটনার পর তিনি ভেঙে পড়েননি, বরং রাগে ফেটে পড়েছিলেন।
নারীবিরোধী এই অ্যাপের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিক ফাতিমা খান, ট্যুইটারে এক জনপ্রিয় মুখ সানিয়া সৈয়দ। সানিয়া লিখেছেন, যারা মেয়েদের ছবির অপব্যবহার করছে তারা ‘সম্ভাব্য ধর্ষণকারী’। এর পাশাপাশি তাঁর কাতর জিজ্ঞাসা, মুসলিম পুরুষদের লিঞ্চ করা হচ্ছে, মুসলিম মেয়েদের হয়রান করা ও অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। এর শেষ কবে অপরাধীরা কি শাস্তি পাবে না।