পুবের কলম প্রতিবেদক: বাংলার শিল্পাকাশে ফের নবপ্রভাত। নতুন করে ফের ফিরছে হিন্দুস্তান মোটরস। ৮ বছর পর রাজ্যে ফিরছে সংস্থাটি। জানা গিয়েছে, শীঘ্রই শুরু হবে বৈদ্যুতিক বাইক উৎপাদন। ফের গাড়ি উৎপাদন শুরু হবে হুগলির উত্তরপাড়ার হিন্দ মোটরে। ইউরোপের একটি বিখ্যাত গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চালু হবে হিন্দুস্তান মোটরস। তারা ইউরোপের একটি সংস্থার সঙ্গে ‘মউ’ স্বাক্ষর করেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি আর্থিক বছরেই গাড়ির উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে উত্তরপাড়ায় ভারতীয় মোটরগাড়ি দুনিয়ার ‘আইকনিক’ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর গাড়ির উৎপাদন শুরু করে বিড়লা গোষ্ঠীর মালিকানাধীন হিন্দুস্থান মোটরস। ৬৬ বছর একটানা রাজত্ব করার পর অবশেষে ২০১৪ সালের মে মাসে কারখানার ঝাঁপ বন্ধ হয়। সেই বছরের ডিসেম্বরে বন্ধ হয় মধ্যপ্রদেশের পিথমপুর কারখানাও। কর্মহীন হন সংস্থার ২৩০০ কর্মী। সেই বন্ধ হওয়া সংস্থার ঝাঁপ ফের খুলবে। তবে এখনই অ্যাম্বাসাডর বা অন্য কোনও মোটর গাড়ি নয়, হিন্দুস্তান মোটরসের ডিরেক্টর উত্তম বোসের কথা অনুযায়ী, আপাতত দু’চাকার গাড়ি দিয়েই দেশের অটোমোবাইল বাজারে পা রাখতে চলেছেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, নিজেদের ‘এইচএম’ ব্র্যান্ডে বিদ্যুৎচালিত স্কুটার দিয়েই দ্বিতীয় দফায় যাত্রা শুরু করতে চলেছে হিন্দুস্তান মোটরস। জানা যাচ্ছে, গ্রিনফিল্ড প্রকল্প হিসাবে এই উদ্যোগে উৎপাদন শুরু করতে প্রাথমিকভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে চলেছে। এর সঙ্গে হিন্দ মোটর কর্তৃপক্ষের হাতে থাকা জমি ও পরিকাঠামো ধরলে মোট লগ্নির পরিমাণ হবে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা।
উত্তম বোস জানান, প্রাথমিকভাবে যৌথ উদ্যোগে দু’চাকার বাহন উৎপাদন শুরু করতে ইউরোপীয় অংশীদার সংস্থার সঙ্গে ‘মউ’ স্বাক্ষরপর্ব শেষ। অংশীদারিত্ব-সহ বাকি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার পর মূল চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পথে। ২০২৩-এর মার্চ মাসের মধ্যেই উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, উত্তরপাড়ায় আমাদের হাতে ২৮৬ একর জমি আছে। সেখানে ছাউনি ও অন্যান্য পরিকাঠামোর অনেকটাই বিদ্যমান। তাই একবার সইসাক্ষর পর্ব মিটে গেলে উৎপাদন শুরু হতে সময় লাগবে না।
জানা গিয়েছে, প্রচলিত ৫১:৪৯ ফর্মুলায় ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকবে সি কে বিড়লার হিন্দুস্তান মোটরসের হাতে। অন্যদিকে ইউরোপীয় সংস্থার হাতে থাকবে ৪৯ শতাংশ মালিকানা। এ বিষয়ে দু’পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে। ১৯৭০ সালে দেশের গাড়ি বাজারের ৭০ শতাংশ মালিকানা ছিল হিন্দুস্তান মোটরসের দখলে। পরে মারুতির আগমন ও পরবর্তীকালে বিদেশি বিভিন্ন গাড়ি ভারতের বাজারে ঢুকে পড়ায় বিক্রি কমতে শুরু করে অ্যাম্বাসাডরের। লোকসানে চলতে থাকে সংস্থাটি। এক সময় কারখানা বন্ধ করে দেয় সি কে বিড়লা গ্রুপ। সে সময়ের ২৩০০ কর্মীর মধ্যে ২০০০ কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পে পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হয়, বাকি ৩০০ কর্মী এখনও বেতন পাচ্ছেন।