পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বিজেপি নেতৃত্বাধীন অসম সরকার সোমবার বিধানসভায় একটি বিল উত্থাপন করেছে যাতে গরুর মাংস বিক্রি এবং গবাদি পশু পরিবহণের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ এছাড়া এতে অনুমতি ছাড়া গরু জবাইয়ের শাস্তি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে জবাইয়ের জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হবে না। ৩৪ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যাবিশিষ্ট অসম হ’ল দেশের প্রথম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য যা এই জাতীয় বিধিনিষেধের প্রস্তাব পেশ করেছে৷ এই অঞ্চলে গরুর মাংস ব্যাপকভাবে খাওয়া হয়, যেখানে খ্রিস্টান জনসংখ্যাও রয়েছে। এতে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতেও সমস্যা তৈরি হবে৷ গোরক্ষার স্বার্থে এই নয়া বিলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যে হিন্দু, জৈন, শিখ ও যেসব সম্প্রদায় গোমাংস খান না, সেই সম্প্রদায় যে এলাকায় বসবাস করে, সেখানে গোমাংস বিক্রি ও খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। তাছাড়া বিলে আরও বলা হয়েছে যে কোনও মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেও গোমাংস বিক্রি করা যাবে না। এই আইন ভাঙলে ১০০০ থেকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হবে। তাছাড়া ৬ মাস থেকে ৮ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে দোষীর। এদিকে কেউ একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে জরিমানা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এই আইন লাগু হলে বাংলাদেশে গরু পাচার কমবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
সোমবার অসম বিধানসভায় হিমন্ত বিশ্ব শর্মা পেশ করেন এই অসম গবাদিপশু সুরক্ষা বিল ২০২১। এই বিলে গোমাংস ও গবাদি পশু পরিবহণের ক্ষেত্রে কঠোর বিধি আরোপিত হয়েছে৷ এতে মেঘালয়, মিজোরাম এবং নাগাল্যান্ডের গবাদিপশু আমদানিতে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। খ্রিস্টান-অধ্যুষিত এই তিনটি রাজ্যে গরুর মাংস ব্যাপকভাবে খাওয়া হয় যা অসম থেকে কেনা হয়৷ মেঘালয় সরকার জানিয়েছে যে বিফ সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা বিষয়টি অসম সরকার ও কেন্দ্রের কাছে তুলবে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা দু’দিন আগে বলেছিলেন যে প্রস্তাবিত অসম আইনের কারণে বাংলা, বিহার ও তেলেঙ্গানার মতো রাজ্য থেকে গবাদিপশুর পরিবহণ বাধাগ্রস্ত হওয়া উচিত নয়। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দাবি করেছেন ১৯৫০ সালের আইনে অনেক ফাঁক রয়েছে তাই নতুন বিল পেশ করা হয়েছে। নয়া বিল আইনে পরিণত হলে গোহত্যা নিয়ে আরও কড়াকড়ি হবে অসমে।