পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: হিজাব নিয়ে জিদ ধরে থাকা ছাত্রীরা দৃঢ় প্রত্যয়ী। কোনও ফরমান তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। হিজাব পরিহিতাদের অবশ্যই মর্যাদা দেওয়া উচিত তাদের সম্মান জানানো উচিত। তাদের অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্টের সামনে এমনই অভিমত প্রকাশ করেছেন হিজাব মামলায় ছাত্রীদের পক্ষের আইনজীবী ইউসুফ মুচায়ালা।
মুচায়ালা তাঁর যুক্তি পেশ করার সময় বলেন, এইসব কিশোরী ছাত্রীরা কি এমন অপরাধ করে বসেছে? তাদের মাথার উপর ঢাকা দেওয়ার জন্য এক টুকরো কাপড় রেখেছে, এটাই কি তাদের বড় অপরাধ? এই আইনজীবী আবারও বলেন, যদি পাগড়ি পরায় আপত্তি না থাকে তাহলে হিজাবে আপত্তি উঠবে কেন? তাছাড়া এটাই তো বড় প্রমাণ বৈচিত্র্যের মধ্যে একতার ও সহিষ্ণুতার।
তাহলে হিজাব নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে কেন? আসলে দু’টি স্বাধীনতার বিষয় বিচার্য। ধর্মের স্বাধীনতা এবং বিবেকের স্বাধীনতা। এই দু’টি একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। হাইকোর্ট কুরআনে হিজাব আছে কি না, সেটা নিয়ে খোঁজ নিল এবং মন্তব্য করল, যদিও হাইকোর্ট এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নয়। মুচায়ালা বলেন, হিজাব একজনের ব্যক্তিগত মৌলিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার কিংবা মৌলিক অধিকারের বিষয় নিয়ে বিতর্ক নয় এটি। কোনও মহিলা মাথা ঢাকা দিতে চাইলে আপত্তি কেন করা হবে?
হিজাব মামলার শুনানিতে বরিষ্ঠ আইনজীবী সলমন খুরশিদও যুক্তি পেশ করেন। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম অবশ্যই পরতে হবে কিন্তু তার সঙ্গে নিজেদের সংস্কৃতি বা অবশ্য পালনীয় বিষয়কে কেন অবজ্ঞা করা হবে?
সলমন খুরশিদ বলেন, হিজাব প্রসঙ্গে কুরআনের আলোচনা হয়েছে। কুরআন মানুষের সৃষ্ট নয়, আল্লাহর বাণী। তাঁর নবী সা.-এর মাধ্যমের প্রেরিত হয়েছে। আর কুরআনের নির্দেশ ও নবির নির্দেশ বাধ্যতামূলক। স্কুল ইউনিফর্মের সঙ্গে হিজাবের অনুমতি থাকলে কি ক্ষতি হবে?
তিনি বলেন, আমাদের বেশ বৈচিত্র্যের দেশ। এখানে বহু শিখ মহিলা মাথায় কাপড় ঢাকা দিয়ে থাকেন। শিখরা পাগড়ি পরে থাকেন। উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তর ভারতে এখনও ঘুঙ্ঘট প্রচলিত রয়েছে। যখন আপনি কোনও গুরদোয়ারায় যাবেন, তখন মাথা ঢাকা দিয়ে যেতে হবে, এটাই সংস্কৃতি। এসব নিয়ে আপত্তি উঠছে কেন?
বিদেশে বহু স্থানে মুসলিমরা মাথায় টুপি পরে না কিন্তু এই উপমহাদেশে বহু মুসলিম মাথায় টুপি পরে থাকেন। এইসব সংস্কৃতি নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে কেন? জানতে চাইলেন সলমন খুরশিদ।
১৪ সেপ্টেম্বর পুনরায় শুনানি রয়েছে এই হিজাব মামলার। কর্নাটক হাইকোর্ট কলেজ কর্তৃপক্ষের হিজাব বন্ধের ফরমানকেই গুরুত্ব দিয়েছে। হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করা এই মামলায় উঠে এসেছে কুরআন হাদিস ও ধর্মীয় অনুষঙ্গ প্রসঙ্গ।