পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলে। এদিন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, -‘ রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য যে ৫ দিন সময় দিয়েছে তা যথেষ্ট নয়’।
এর পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানায়, -‘ পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হবে কি না? সে বিষয়ে রাজ্য সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে’।
এই মামলায় বঙ্গ বিজেপির দাবি, -‘ এত অল্প সময়ের মধ্যে ৭৫ হাজার মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া অসম্ভব। আর অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন রয়েছে’।
মনোনয়নের দিন সংখ্যা নিয়ে হাইকোর্ট একপ্রকার সহমত প্রকাশ করলেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়টি আদালত রাজ্যের ওপরই ছেড়েছে। তবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানাতে হবে। একই সঙ্গে জেলাশাসকের অফিসে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া যেতে পারে কিনা? তাও জানাতে হবে।এক্ষেত্রে আদালত বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছে, -‘ ভোটগ্রহণ থেকে গণনা, গোটা প্রক্রিয়া সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে করা ভাল’।
এছাড়া চুক্তিভিত্তিক কর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের পঞ্চায়েত ভোটে ব্যবহার করা নিয়ে আদালতের কোনও নির্দেশ থাকলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তা মেনে চলতে হবে। অর্থাত্ ভোটের একাধিক কাজে সিভিক বা স্কুল শিক্ষকদের ব্যবহার করা যাবে না কারণ কোন কোন কাজে সিভিকদের ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে এর আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একটি নির্দেশ রয়েছে ।তবে কলকাতা হাইকোর্ট এদিন স্পষ্ট করেছে, -‘ আদালত চায় অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।
কোনও অশান্তির পরিবেশে যাতে নির্বাচন না হয় তা নিশ্চিত করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এর পাশাপাশি প্রার্থী এবং ভোটারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। তাহলে কি বাহিনী আসবে? এক্ষেত্রে অবশ্য রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে জানান, -‘ স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কলকাতা হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্ট তা স্পষ্ট করে দিয়েছে’।
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল এই প্রসঙ্গে জানান – ” সংবিধান প্রদত্ত স্বশাসিত সংস্থা নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন নিয়ে আদালত সাধারণত হস্তক্ষেপ করতে চায়না।তবে অভিযোগ গুরতর উঠলে তখন হস্তক্ষেপ গ্রহণে দ্বিধা করেনা আদালত “।