বিশেষ প্রতিবেদন: সকালে ঘুম থেকে ওঠা, স্বাস্থ্যসম্মত একটি অভ্যাসের মধ্যে গণ্য হয়। ভোরে উঠে যোগা আসন, মেডিটিশন করলে সারাদিনের কাজের এনার্জি পাওয়া যায়। তবে দেখা গেছে, একাংশ মানুষের ঘুম থেকে ভোরে উঠলে মাথাযন্ত্রণা শুরু হয়। ফলে তরতাজাভাবে দিনটি কাটানোর পরিকল্পনা থাকলেও মাথা যন্ত্রণা সেই কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। কিন্তু কেন এই ধরনের মাথাযন্ত্রণা হয়? এর পিছনে কি লুকিয়ে আছে কোনও সাংঘাতিক অসুখ!
তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ভোরে ওঠার পর মাথা যন্ত্রণাকে হেলাফেলা করা উচিৎ নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এই ধরনের মাথাযন্ত্রণার পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে মাইগ্রেন, অনিদ্রা, বিষন্নতা, ভুল অবস্থানে ঘুমনো, অত্যাধিক পরিমাণে অ্যালকোহল সেবনের মতো কারণ। সকালে উঠে যদি মাথাযন্ত্রণা নিয়ে বসে থাকতে হয়, তাহলে সেটি সারাদিনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে যায়। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউএসসির কেক স্কুল অফ মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল মেডিসিন বিভাগের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, ১৩ জনের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছিল। তার মধ্যে দেখা গেছে একজনের ওপরে এই গবেষণা সফল হয়েছে।
কি কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
১)অনিদ্রা: অনেক সময় অত্যাধিক কাজের প্রেসার, রাতে বেশি সময় ধরে মোবাইলে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ফলে ভোরে উঠলে মাথাযন্ত্রণার সম্ভাবনা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। অনিদ্রার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ঘুমের একটি নির্দিষ্ট সময় সেট করা জরুরি। আর ঘুমের আগে যতদূর সম্ভব ল্যাপটপ, মোবাইল থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। একটি আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করা খুব প্রয়োজন।
২) মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধি: অনেক সময় বিভিন্ন কারণে বিষন্নতা, মন খারাপ মনকে ভারী করে তোলে। সারাদিন একই কথা নিয়ে বার বার চিন্তা করতে থাকলে সেখানেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। বিষন্নতা, উদ্বেগ কাটাতে আত্মীয় স্বজন, পরিবারের সদস্যদের নিজের সমস্যা জানানো খুব প্রয়োজন। যতটা সম্ভব নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে হবে।
৩) নিদ্রাহীনতা: নিদ্রাহীনতা এটি একটি ঘুমের ব্যাধি। যার কারণে একজন ব্যক্তির ঘুমের মধ্যে শ্বাস সাময়িকভাবে কয়েকবার বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও, অন্যান্য অনুষঙ্গী লক্ষণ রয়েছে, যেমন নাক ডাকা, ঘুমানোর সময় দম বন্ধ হওয়া, শুকনো মুখ নিয়ে জেগে উঠা, ঘুম থেকে উঠলে ক্লান্ত বোধ করা।
৪) ভুল ঘুমের অবস্থান: যেখানে আপনি ঘুমোন, সেই বিছানাটি আরামপ্রদ হওয়া প্রয়োজন। ভুল এবং অস্বস্তিকর অবস্থানে ঘুমলে ঘুম থেকে উঠলে মাথা ব্যথার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৫) মাইগ্রেন: ভোরে ঘুম থেকে উঠেই মাথাযন্ত্রণার অন্যতম কারণ হল মাইগ্রেন। এই সমস্যায় আক্রান্তদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে।
৬) অ্যালকোহল সেবন: বেহিসেবি জীবনযাপন ভোরে মাথাযন্ত্রণার অন্যতম কারণ। বেশি রাত ধরে হই-হুল্লোড় করা, নাইট পার্টি, অ্যালকোহল সেবন সাধারণত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। সকালে উঠতে গেলে হ্যাং ওভারের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এড়িয়ে চলতে হবে। যদি মাথাব্যথার সাথে অন্যান্য উপসর্গ থাকে, যেমন বমি বমি ভাব বা বমি, মাথা ঘোরা তাহলে দেরি না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।