গুজরাতের ভাদোদরা, সুরাট, ভাবনগর, জুনাগড় এবং আহমদাবাদে আমিষ খাবারের স্টলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই এলাকাগুলিতে পুরোভোট রয়েছে। অভিযোগ সেই পুরোর্নির্বাচনের কারণেই এমন বিধান।গণতান্ত্রিক দেশে এমন খাপ পঞ্চায়েত মার্কা নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুব্ধ গুজরাট হাইকোর্ট। আমিষ খাদ্য বিক্রেতাদের ওপর অযথা এমন নিষেধাজ্ঞায় প্রশাসনকে ভর্ৎসনা করে হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার আদালত জানায়,শুধুমাত্র কিছু মানুষের ইগোকে সন্তুষ্ট করতে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত নয়। যদিও আহমেদাবাদ পুরসভার দাবি, কেবল মাত্র সরকারি জমি দখল করে রাখা খাবারের স্টলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গত মাসে প্রকাশ্যে আমিষ বিক্রি নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আহমেদাবাদ পুরসভা। একই পদক্ষেপ গ্রহণ করে বরোদা-সহ আরও নানা শহরের প্রশাসন। এরই প্রতিবাদে ২৫ জন হকার আদালতের দ্বারস্থ হন। সম্প্রতি তাঁদের গাড়ি কেড়ে নিয়েছিল পুরসভা। তবে ওই বিক্রেতারা জানিয়েছিলেন, কেবল ডিম বা আমিষ পদই নয়, তাঁরা নিরামিষও বিক্রি করতেন। এদিন আদালত আহমদাবাদ পুরসভাকে বলে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিন। ওদের পণ্য সামগ্রী ফিরিয়ে দিন। বিচারপতি বলেন, ‘বলতে পারেন ঠিক কোন যুক্তিতে পুরসভার ভাবাবেগে এমন আঘাত লাগল?’
সরকারি আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেন, “আপনার সমস্যা কী? আপনি আমিষ খাবার পছন্দ করেন না, এটা আপনার নিজস্ব বিষয়। আমি বাইরে কী খাব, তা নিয়ে আপনি কীভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন? কাল কি আপনারা ঠিক করবেন আমি বাড়ির বাইরে কি খাব? কর্পোরেশন কমিশনারকে ফোন করুন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করুন তিনি কি করছেন। কাল তারা বলবে আখের রস খাওয়া উচিত নয় কারণ এতে ডায়াবেটিস হয়? তারা হয়ত বলবে কফি পান চলবে না। কারণ তা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ।”
মামলাকরীদের আইনজীবী রনিথ জয় বলেন, সরকারি কোনও নির্দেশ ছাড়াই স্টলগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। রাজকোর্টের মেয়র বলেছিলেন স্টলগুলিতে আমিষ বিক্রি করে ওই বিক্রেতারা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছে। আহমদাবাদ পুরসভার হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সত্যম ছায়া। তিনি আদালতে বলেন, কিছু ভুল ধারণা তৈরী করা হয়েছে। সব আমিষ স্টল বন্ধ করার জন্য এই অভিযান চালানো হয়নি। এই অভিযান চালানোর মূল উদ্দেশ ছিল রাস্তার দখলদারি রোখা।স্টলগুলি ফুটপাত দখল করে রাখার কারণে পথচলতি মানুষেরা অসুবিধার মুখে পড়ছিলেন।
এর জবাবে বিচারপতি বলেন, ”আমি যদি আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়ে থাকি, তবে তা প্রত্যাহার করছি। দখলদারির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হলে তা স্বাগত। এটা আপনাদের ক্ষমতা। কিন্তু মনে রাখবেন, স্রেফ কেউ বলল বলল আর কাউকে আটকানো হল, এটা যেন না হয়।”