পুবের কলম প্রতিবদেক: সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ খুনের মামলায় একাদশ তম অভিযুক্তকে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্নাটক হাইকোর্ট। এই নির্দেশের বিরোধিতা করে সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন গৌরীর বোন কবিতা। তার দাবি, অভিযুক্তদের কাউকেই জামিন দেওয়া যাবে না কারণ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কর্নাটক কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইমস অ্যাক্ট, ২০০০- এর প্রাসঙ্গিক ধারায় অভিযোগ রয়েছে। তাই জামিনের বিরোধিতা করে আমি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছি৷ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াও শুরু হয়েছে৷ বিচারপতি এস বিশ্বজিৎ শেট্টির একটি একক বেঞ্চ ৭ ডিসেম্বর অভিযুক্ত মোহন নায়ককে ১ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেয়। এই মামলায় মোহনই প্রথম জামিন পেয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অন্যান্য অভিযুক্তদের সঙ্গে গৌরী লঙ্কেশকে হত্যার ষড়যন্ত্রে সে লিপ্ত ছিল। এমনকী গৌরীকে খুনের জন্য রামনগর জেলার কুম্বলগোডুর তাগাচুকুপেতে একটি বাড়িও ভাড়া নিয়েছিল সে। প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগেই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া মুখ্যসচিবকে লঙ্কেশ খুনের মামলায় বিশেষ আদালত গঠনের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন৷ তার পরেই এই জামিনের ঘটনা ঘটল৷
সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে বেঙ্গালুরুর রাজরাজেশ্বরী নগর এলাকায় ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তার বাড়ির বাইরে তিন জন মোটরসাইকেল আরোহী গুলি করে হত্যা করে। তিনি হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির একজন স্পষ্টবাদী সমালোচক ছিলেন। শুধু সাংবাদিক হিসেবে গৌরী লঙ্কেশকে বিশেষিত করা হলে কম বলা হয়। কারণ সমাজজীবনে মানবাধিকার, উগ্র হিন্দুত্ববাদ, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী লড়াইতে লঙ্কেশের অবদান ছিল আরও অনেক অনেক বেশি। গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকান্ডে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের চার্জশিট থেকে জানা গেছে গৌরী লঙ্কেশের হত্যার জন্য দায়ী হিন্দু চরমপন্থী সংগঠন সনাতন সংস্থা।
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ গৌরী লঙ্কেশের হত্যার আগে ২০১৩-র আগস্ট মাসে খুন করা হয় সমাজকর্মী নরেন্দ্র দাভোলকরকে। ২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে খুন হয়ে যান বামপন্থী রাজনীতিবিদ গোবিন্দ পানসারে এবং ২০১৫-র আগস্ট মাসে হত্যা করা হয় এম এম কালবুর্গিকে। এই তিন হত্যাকান্ডেই আততায়ীরা মোটরবাইকে করে এসেছিল এবং হেলমেটে তাদের মুখ ঢেকে রেখেছিল। ঠিক একই কায়দায় নিজের বাড়ির সামনেই আততায়ীরা গুলি করে হত্যা করে গৌরী লঙ্কেশকে।