পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ দেশের প্রজাই ভুটানের রাজার মূল সম্পদ। কারণ রাজা জানেন– প্রজা না থাকলে দেশে তাঁরও কোনও অস্তিত্ব নেই– নেই কোনও সম্মান। এ কারণেই মহামারির সময়ে মানুষের বিপদে সর্বদা হাজির হতে দেখা গিয়েছে ভুটানি রাজা জিগমে নামগেল ওয়াংচুককে। পিঠে একটি ব্যাগ ঝুলিয়ে জঙ্গলের সাপজোঁক– পাহাড়পর্বতের বিপদ পার করে কোভিড আক্রান্ত এলাকায় দ্বিধাহীন ভাবে ঢুকে গিয়ে মানুষের খোজখবর নিয়েছেন নিজেই। এক বা দুই’দিন নয়– টানা ১ বছর ২ মাস ধরে এই সমাজসেবা করে গিয়েছেন রাজা ওয়াংচুক। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশে করোনার বিস্তার রুখে দেওয়া।
৪১ বছর বয়সী রাজার এই ভ্রমণের ফলাফলও চমকপ্রদ ও স্পষ্ট। হিমালয়ের পূর্বদিকে ভারত ও চিনের মাঝামাঝি অবস্থিত হলেও ভুটানে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র ১! দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেন– ’রাজা যখন মাইলের পর মাইল ভ্রমণ করেন এবং মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মহামারি সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক করেন– তার কথা মানুষ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় এবং সম্মান করে।’ শেরিং আরও বলেন– ’শ্রদ্ধেয় রাজার উপস্থিতি জনস্বাস্থ্যবিধি জারির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তার উপস্থিতি মানুষকে বুঝিয়ে দেয়– মহামারির বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে তারা একা নয়।’ সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রজার জন্য প্রাণপাত ভুটানের রাজার
২৫০ ফুট পথ পাড়ি দিয়েছেন। সোশ্যাল সাইট ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের পেজে রাজার করোনাকালীন এই ভ্রমণ ও কাজের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। রাজপ্রাসাদের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন– ’আমাদের রাজার সবচেয়ে বড় ভয় এটাই– যদি মহামারি এখানে বনে আগুন ধরার মতো করে ছড়িয়ে পড়ে– তাহলে আমরা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভুটান প্রতিনিধি রুই পাওলো ডি জেসাস বলেন– ’রাজা সবগুলো ঝুকিপূর্ণ সীমান্তে গিয়েছেন এবং সব জায়গার কোভিড সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। নিজেদের সামান্য যা আছে– তা দিয়েই সেরা সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন।’ উল্লেখ্য– ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বিদেশিদের জন্য নিষিদ্ধ থাকা রাষ্ট্র ভুটানে প্রতি ২০০০ জন মানুষের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক রয়েছে।