এবার বিহারের রাজধানী পাটনার শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ঐতিহাসিক সুলতান প্রাসাদটি ভেঙে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছে নীতীশ কুমার সরকার। ঐতিহাসিক, সংরক্ষণবাদী এবং সাধারণ নাগরিকদের হতবাক করেছে বিহার সরকারের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত।তাঁরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধীতা করেছেন। ঐতিহাসিক এই স্থাপত্য ধ্বংস করার পরিবর্তে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য আবেদন জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক সক লেই। নীতীশ কুমার সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে রাজ্য মন্ত্রিসভা পাটনায় তিনটি পাঁচতারা হোটেল নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে, যার মধ্যে একটি বিয়ার চাঁদ প্যাটেল রোডে ১০০ বছরের পুরনো সুলতান প্যালেসের জায়গায় রয়েছে। এই সিধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ক্ষোভ,প্রতিবাদে সরব হন সকলেই। ঐতিহাসিক, নাগরিক সমাজের সকলেই একটাই দাবি তুলেছেন কেন সম্পূর্ণ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিহারের নীতীশকুমার সরকার? পরিবর্তে এটিকে সংরক্ষণ করে কি একটি হেরিটেজ হোটেলে রূপান্তরিত করা যায়না? ঐতিহাসিক গার্ডিনার রোডে (বর্তমানে বিয়ার চাঁদ প্যাটেল রোড) অবস্থিত প্রাসাদটি ১৯২২ সালে পাটনার কিংবদন্তি ব্যারিস্টার স্যার সুলতান আহমেদ নির্মাণ করেছিলেন, যিনি পাটনা হাইকোর্টে সংক্ষিপ্তভাবে বিচারক হিসেবেও কাজ করেছিলেন। এবং একই সঙ্গে প্রথম ভারতীয় ভাইসরয় হিসেবেও কাজ করেছিলেন। – ১৯২৩-৩০ সাল পর্যন্ত পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরও ছিলেন তিনি। এই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মানুষটি মহাত্মা গান্ধির সঙ্গে লন্ডনে ১৯৩০ সালে ঐতিহাসিক গোলটেবিল সম্মেলনের জন্য ভারতের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও সংযুক্ত ছিলেন। পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলর আরবিপি সিং আইকনিক প্রাসাদটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তে মর্মাহত । সুলতান প্রাসাদের মতো একটি স্থাপত্যের এবং ঐতিহাসিক ভবন ভেঙে ফেলার কথা কেউ কীভাবে ভাবতে পারে? গত এক দশকের মধ্যে এতগুলি ঐতিহাসিক ভবন ইতিমধ্যেই ভেঙে ফেলা হয়েছে, সর্বশেষটি হল শতাব্দী প্রাচীন পাটনা কালেক্টরেট, যা সংরক্ষণ করা উচিত ছিল। আর, এখন তারা উন্নয়নের নামে এই সুন্দর প্রাসাদকে ভগ্নস্তূপে রূপ দিতে চায়, এটি বন্ধ করতে হবে, এবং সমাজকে জেগে উঠতে হবে এবং তার ঐতিহ্যকে রক্ষার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে,” আক্ষেপ করে ব লেন পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলর আরবিপি সিং। অন্যদিকে ঐতিহাসিক ইরফান হাবিবও একটি পাঁচ তারকা হোটেলের জন্য প্রাসাদটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে গভীর মর্মাহত।