পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড) তথা আইএমএফ এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক আশা প্রকাশ করেছিল যে, ২০২৩ সালে ভারত দ্রুত বৃদ্ধির বৃহত্তর অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে। যদিও তাদের আশংকা ছিল, চলতি বছরে সারা বিশ্বে আর্থিক বৃদ্ধি ৩ শতাংশেরও নীচে থাকবে। একইসঙ্গে তারা এও বলেছিল, বিশ্বজুড়ে আর্থিক বৃদ্ধির হার তলানিতে থাকলেও ভারত ও চিনের জন্য থাকবে সুখবর। এই দুই দেশের দখলেই থাকবে বিশ্ব অর্থনীতির অর্ধেক বৃদ্ধি। আর এবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন দাবি করেছেন, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ৭ শতাংশ পর্যন্ত অনুমান করা হয়েছিল।
২০২২-২৩ অর্থবর্ষের আর্থিক সমীক্ষায় এমনটা অনুমান করা হয়েছিল। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে ভারত এবং সেইমতো ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ৭ শতাংশ হারে হবে। আইএমএফ-এর প্রধান কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ও আর্থিক কমিটির প্লোনারি আলোচনাসভায় যোগ দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বৈশ্বিক নীতি এজেন্ডায় অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে নির্মলা বলেন, একটি অনুকূল দেশীয় নীতি, পরিবেশ, পরিকাঠামোগত সংস্কারের উপর সরকারের সজাগ দৃষ্টি ভারতের আভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে শক্তিশালী করে রেখেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে আইএমএফ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন যে, গতবছর বিশ্ব অর্থনীতিতে বৃদ্ধির হার যা ছিল (৩.৪ শতাংশ) চলতি বছরে তার থেকেও কম থাকবে আর্থিক বৃদ্ধির হার। ফলে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র ও অনাহার বাড়বে। জর্জিয়েভার আশঙ্কা, শুধু চলতি বছর নয়, আগামী কয়েক বছরেও বিশ্বের অর্থনীতিতে বৃদ্ধির হার তলানিতে থাকবে। এমনকী আগামী ৫ বছরেও এই হার ৩ শতাংশের নীচে থাকবে।
১৯৯০ সালের পর এটাই সর্বনিম্ন বৃদ্ধির হার। এবং গত দুই দশকে গড় আর্থিক বৃদ্ধি (৩.৮)-র থেকেও নীচে থাকবে বর্তমান আর্থিক বৃদ্ধির হার। তাঁর মতে, ২০২১ সালে বিশ্ব বাজারে অর্থনীতির হাল ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে ২০২২ সালে বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধি কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ থেকে কমে ৩.৪ শতাংশে নেমে আসে। তবে আশার কথা হল, বিশ্বের বাজারে আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা খেলেও এশিয়ার দেশগুলিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। এমনকি ভারত ও চিনের মতো বড় দুই দেশ চলতি বছরে বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধির অর্ধেকের অংশীদার হয়ে উঠতে পারে তার উপর বলে আশা আইএমএফ-এর। বিশ্ব অর্থনীতিতে এশিয়া সবসময়ই একটি ‘উজ্জ্বল স্থান’ বলে মনে করেন জর্জিয়েভা।