পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ঘটে যাওয়া শ্রদ্ধা-আফতাবের ঘটনা দেশের মধ্যে আলোড়ন ফেলেছে। অভিযুক্ত আফতাবের বয়ান ধরেই তদন্তে এগোচ্ছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার সূত্রে গত ১৮ মে-এর মধ্যরাতের একটি ফুটেজ ধরা পড়েছে। সেই ফুটেজে কাঁধে ব্যাগ নেওয়া অবস্থায় একটি ছেলেকে হাঁটতে দেখা গেছে। পুলিশের ধারণা সেই ছেলেটি আফতাব। দেহের টুকরোগুলির মধ্যে কয়েকটি দেহাংশ উদ্ধার হলেও শ্রদ্ধার কাটা মাথা এখনও পাওয়া যায়নি।
এবার উত্তরপ্রদেশে আরও একটি নারকীয় ঘটনা সামনে এল। প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে দেহ ৬টি টুকরো করার অভিযোগ। মৃতার নাম আরাধনা। অভিযুক্তের নাম প্রিন্স যাদব। শনিবার প্রিন্সকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর রবিবার অভিযুক্তকে নিয়ে মৃতার কাটা মাথা খুঁজতে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে প্রিন্স। লুকিয়ে নিজের কাছে একটি দেশীয় পিস্তল রেখেছিল সে। সেই বন্দুক দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পালটা গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয় প্রিন্স।
রবিবার রাতে পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তার প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে তার দেহের ৬টি টুকরো করার অভিযোগ রয়েছে। মৃতার দেহাংশ একটি কুয়ো থেকে উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্তের নাম প্রিন্স যাদব। রবিবার মৃতার দেহাংশ খুঁজতে অভিযুক্ত প্রিন্সকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তখনই সে পুলিশের দিকে তাক করে গুলি ছুঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। প্রিন্সকে লক্ষ্য করে পুলিশ এনকাউন্টার করে। গুলি লাগে প্রিন্সের শরীরে।
গত ১৫ নভেম্বর খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। বেশ কয়েকজন স্থানীয় মানুষ উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমী গ্রামে একটি কুয়োর মধ্যে দেহের অংশ ভাসতে দেখে তারা পুলিশকে খবর দেয়। তার পর পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে।
পুলিশ সুপার (আজমগড়) অনুরাগ আর্য জানিয়েছেন, মৃতার নাম আরাধনা। কুয়োর মধ্যে থেকে তার দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে। দেহটি দু-তিনদিনের আগে বলেই মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্ত প্রিন্স যাদব তার বাবা, ভাগ্নে সর্বেশ, ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মিলে আরাধনাকে ২০২০ সালেই খুনের পরিকল্পনা করেছিল। কারণ প্রিন্স অন্য কাউকে বিয়ে করতে চেয়েছিল।
প্রিন্সের প্রাক্তন প্রেমিকা আরাধনা আজমগঢ়ের ইশাক পুর গ্রামের মেয়ে ছিলেন। এই বছরের শুরুতেই প্রিন্স যাদব অপর এক তরুণীকে বিয়ে করে বলে জানা গিয়েছে। নভেম্বরের ৯ তারিখে প্রিন্স বাইকে করে আরাধনাকে একটি মন্দিরে নিয়ে যায়। মন্দিরে যাওয়ার পথে সে একটি আখেরখেতে পৌঁছায়। সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল তার ভাগ্নে সর্বেশ। পরিকল্পনা মতো প্রিন্স আর সর্বেশ দুজনে মিলে আরাধনাকে শ্বাসরোধকে খুন করে।
এর পর তারা দুজনে মিলে আরাধনার দেহ ৬ টুকরো করে কেটে একটি পলিথিন ব্যাগের মধ্যে পুড়ে কুয়োর মধ্যে ফেলে দেয়। আরাধনার কাটা মাথা তারা ছুঁড়ে কাছের একটি পুকুরে ফেলে। মামলায় এ পর্যন্ত একটি ধারালো অস্ত্র, একটি দেশি পিস্তল ও একটি কার্তুজ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনায় অভিযুক্ত সর্বেশ, প্রমীলা যাদব, সুমন, রাজারাম, কালাবতী, মঞ্জু, শীলা, যারা যাদবকে অপরাধে সাহায্য করেছিল তারা সবাই এখনও পলাতক।