পুবের কলম প্রতিবেদক: শুধু মানুষদেরই নয়, এবার বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে ডিউটি পড়ছে হাতিদেরও। ভোট বৈতরণী পার করতে এবার হাতিদেরও কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই হাতিদের কাজে লাগানো হবে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায়। মূলত ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা ও নির্বাচন পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতেই এই উদ্যোগ বলে জানা যাচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। জলপাইগুড়ি জেলার একটা বড় অংশই জঙ্গল ও চা বাগান অধ্যুষিত।
ফলে হাতির করিডোরে যে সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে সেই জায়গাগুলিতে ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা ও ভোটদান প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতেই কুনকি হাতি দিয়ে পেট্রোলিং করানো হবে বলে জানা যাচ্ছে। আর শুধু তাই নয়, আপৎকালীন অবস্থায় ভোট কর্মীদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছে দিতেও ব্যবহার করা যাবে কুনকি হাতিদের।
জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার, বানারহাট, নাগরাকাটা, গজোলডোবা, রাজগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকায় বুনো হাতির করিডোর রয়েছে। তার মধ্যেও ক্রান্তির কাঠামবাড়ি, বানারহাটের মরাহাটের মতো এলাকাগুলিতে বুনো হাতিদের আনাগোনা বেশি। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই সমস্ত জায়গায় বুনো হাতিদের আনাগোনা লেগেই থাকে। বিভিন্ন সময় হাতির হামলায় মানুষের মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়।
তাই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের আশেপাশে যাতে বুনো হাতির দল না আসতে পারে বা ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যাতে কোনওভাবেই বিঘ্ন না ঘটে সেই কারণেই কুনকি হাতিদের প্রস্তুত রাখা হবে। সেক্ষেত্রে বনবিভাগের সঙ্গে কথা বলে বুনো হাতিদের অবস্থান বুঝে কুনকি হাতিদের প্রস্তুত রাখা হবে বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়া এই বছর ভোট হচ্ছে বর্ষাকালে। তাই গুরুতর পরিস্থিতিতে ভোট কর্মীদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌছে দিতেও প্রয়োজন হলে কুনকি হাতির সাহায্যে নেওয়া হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা নির্বাচনী আধিকারিক মৌমিতা গোদারা জানিয়েছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি বুঝে বনবিভাগের সঙ্গে কথা বলে কুনকি হাতিদের তৈরি রাখব। আমাদের জেলায় বুনো হাতির আক্রমণের একটা প্রবণতা আছে। তাই আমরা কোনওভাবেই ভোট কর্মীদের নিরাপত্তায় খামতি রাখতে রাজি না। কারণ হাতির করিডোরে যদি বুনো হাতি চলে আসে তাহলে সেই সময় ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কুনকি হাতিদের দিয়ে পেট্রোলিং করান হবে।’
কমিশনের এই উদ্যোগে ভোটে হাতির আক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।