ইনামুল হক, বসিরহাট: এই মাতৃভূমি, এই দেশের ইতিহাস, সভ্যতা আজ বিপন্ন। বিপদটা অনেক বড়। এটা কোন দলের বিরুদ্ধে দলের ধর্মের পারস্পরিক দ্বন্দ্বের বিষয় নয়। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষার জন্য আজ দ্বিতীয় স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কেবল ঐকতান মিল্লি ইত্তিহাদ মজলিশ নয় সমস্ত শান্তিকামী সংগঠনগুলি আজ এই লড়াইয়ের সামিল হতে চাইছে।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা গড়পাড়া এলাকায় নাগরিক সংহতি সমাবেশে এমনই বক্তব্য তুলে ধরেন দি মুক্তি কমিটির সম্পাদক ছোটন দাস, ভানু সরকার, সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখরা। বক্ত বন্দী মুক্তি কমিটির সদস্য ভানু সরকার বলেন, কেবল দেশের ইতিহাস বদলের চেষ্টা নয়, আজকে যে পৃথিবীর ইতিহাস বদলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে তার বড় উদাহরণ প্যালেস্টাইন। সেখানে শান্তির পক্ষে ভোটদানে ভারতবর্ষের বিরত থাকা আমাদের কাছে লজ্জার।
এদিনের কনভেনশন থেকে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও দলিত লেখক সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, গত সাড়ে ন’বছরের একটি দানবীয় সরকার যে বিপর্যয়ের মধ্যে দেশকে নিয়ে গিয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ভারতবর্ষের সমস্ত ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে একটা আকুতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেজন্য আমি আহ্বান জানাবো, আগামী ২০২৪ এর নির্বাচনে মানুষকে ইণ্ডিয়া জোটের নেতৃত্বাধীন দলকে ক্ষমতায় আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য। সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। যে সমস্ত সংগঠন এই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তাদেরকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।
সেই সঙ্গে সমস্ত অসংগঠিত মানুষকে সংগঠনের ছাত্রছায়ায় এনে যেখানে যেখানে অবিচার অত্যাচার হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ লড়াই করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আজ সমগ্র বিশ্ব যেখানে প্যালেস্টাইনের শান্তির পক্ষে ইসরাইল ও তার দুই জারজ পিতা-মাতা আমেরিকা ও ব্রিটেন যেভাবে বোমাবাজি করে মানুষ মারছে তা একবিংশ শতাব্দীর লজ্জা। এর প্রতিবাদে আগামী ২ নভেম্বর শিয়ালদা থেকেে ধর্মতলা পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। সমস্ত স্তরের মানুষকে এই মিছিলে আহ্বান জানাচ্ছি।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামায়াত ই ইসলাম হিন্দের মাওলানা তাহেরুল হক, ড.সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা খালিদ সাহেব, ডা. আলমগীর সরদার, ঐকতান মিল্লি ইত্তেহাদ মজলিশের পক্ষে মাওলানা আমিনুল আম্বিয়া, মাওলানা আব্দুল মুমিন, শিক্ষক মুহাম্মদ শাহনাওয়াজ, ওবায়দুর রহমান, শেখ ইমদাদুল্লাহ, আবু হানিফা, গওসুল আজম, আইনজীবী সফিউল আলম, মাওলানা গোলাম মোর্তাজা, প্রাক্তন মাদ্রাসা ছাত্রনেতা আব্দুল মোমেন প্রমুখ।এদিন সংগঠনের পক্ষে সম্পাদক রুহুল আমিন নাগরিক কনভেনশনের গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ পাঠ করে শোনান।
তিনি জানান, মুসলিম ,দলিত, আদিবাসী তথা সেক্যূলার সমাজ নিজেদের মধ্যে সংহতি ও সমন্বয় রচনায় আগামী দিনে আরো বেশি বেশি মৈত্রী সভায় মিলিত হতে থাকবে । এই সমাজ, মাতৃভূমি তথা ভারতকে রক্ষায় যে সকল ঐতিহাসিক অবদান রেখেছে, তার প্রচার- প্রসার বেশি বেশি করবে এবং খুব শীঘ্র সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণে একটি তথ্যসমৃদ্ধ ‘ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট ‘ রচনা করা হবে এবং তা প্রচার করা হবে । দেশের মধ্যে সক্রিয় সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী শক্তিসমূহকে দূর্বল ও প্রতিরোধ করতে আগামী দিনে প্রয়োজনীয় যৌথ পলিসী- প্রোগ্রাম গ্রহণ করবে এবং দেশের নাগরিকগণের মাঝে আসন্ন সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে যৌথ জাগরণী আন্দোলন চালিয়ে যাবে ঐকতান মিল্লি ইত্তিহাদ মজলিশ।