পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে উঠে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এক মামলা। সেখানে পর্ষদের বর্তমান সভাপতি গৌতম পালকে প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের রাস্তায় হাঁটতে নিষেধ করলেন বিচারপতি।
মানিক ভট্টাচার্যের জায়গায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে দায়িত্ব নিয়েছেন গৌতম পাল। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছিলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও রকম দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। সেই গৌতম পালকেই একপর্যায়ে ভর্ত্সনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি প্রশ্ন তুললেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে। পর্ষদ সভাপতির উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ”মানিক ভট্টাচার্যের রেখে যাওয়া জুতোয় পা গলাবেন না।” জবাবে পর্ষদ সভাপতি বলেন, ”আচ্ছা ধর্মাবতার।”
এদিন কলকাতা হাইকোর্টে ২০১৪ সালের টেটের শংসাপত্র সংক্রান্ত একটি মামলায় শুনানি চলে। ওই মামলায় সশরীরে হাজিরা দেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। এদিন এজলাসে তিনি জানান, ‘ কিছু আর্থিক সমস্যার কারণে এত দিন পরীক্ষার্থীদের শংসাপত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তা দিয়ে দেবেন’।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান “আমার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাতারাতি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সময় টাকা থাকে, আইনজীবীদের পিছনে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করার সময় অসুবিধা হয় না, অথচ টেটের শংসাপত্র দেওয়ার সময় অর্থনৈতিক রীতিনীতির দোহাই দিতে হয়!”
উল্লেখ্য , ২০১৪ সালের প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণ সব চাকরিপ্রার্থীকে শংসাপত্র দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১৯ সালে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর রায়ে জানিয়েছিলেন, আগামী ২ বছর শংসাপত্রের মেয়াদ থাকবে। সে সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। ২০১৪ সালের টেট সার্টিফিকেট দিতে দেরি হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। সব শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, পর্ষদ সভাপতিকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার। সেই মতো শুক্রবার আদালতে আসেন গৌতম পাল। এদিন পর্ষদ সভাপতিকে নির্দেশ দেন, -‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরীক্ষার্থীদের টেট সার্টিফিকেট দিয়ে দেবেন’।
বিচারপতি এরপরই পর্ষদ সভাপতির উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘মানিক ভট্টাচার্যের জুতোয় পা গলাবেন না।’ যা শুনে গৌতম ইতিবাচক উত্তরও দেন বলে জানা গেছে।