পুবের কলম প্রতিবেদক: নিহত ছাত্রনেতা আনিস খানের স্মৃতিতে রক্তদান উৎসব করল আলিয়ার শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে এই রক্তদান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আলিয়ার শিক্ষার্থীদের পক্ষে মাদ্রাসা স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এই আয়োজন করে।
রক্তদান উৎসবকে ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এ দিন ১৫ ছাত্রী, ২জন অধ্যাপক ও ৪৬ ছাত্র মিলিয়ে মোট ৬৩ জন রক্তদান করেন। রক্ত সংগ্রহের জন্য আলিয়ার নার্সিং বিভাগের ছাত্রীরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং লাইফ কেয়ার ব্লাড ব্যাঙ্ককে এই রক্ত দেওয়া হয়।
এ দিনের রক্তদান উৎসব কর্মসূচিতে আলিয়ার শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাচ পরে আনিস খানের পরিবারের উপরে হামলার ঘটনার নিন্দা জানায়। পাশাপাশি হামলার ঘটনার বিচার ও আনিস খানের পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চত্বরে পোস্টারিং করে পড়ুয়ারা।
এ দিনের রক্তদান উৎসবে উপস্থিত ছিলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার নুরুস সালাম, পুবের কলম-এর সম্পাদক ও রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী প্রমুখ। তাঁরা এ দিন রক্তদানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা কথা উল্লেখ করেন। বক্তারা ছাত্রছাত্রীদের রক্তদান উৎসব আয়োজনের উদ্যোগকে সেলাম জানান।
রেজিস্টার নুরস সালাম শিক্ষার্থীদের রক্তদান উৎসবের আয়োজনের প্রশংসা করেন। এ দিন যারা রক্তদান করলেন তাদের সঙ্গে কথা বলেন আহমদ হাসান ইমরান।
ইমরান বলেন, শিক্ষার্থীদের রক্তদানের মতো মহৎ উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। যারা রক্তদান করলেন তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। বিধায়ক ও আলিয়ার প্রাক্তন নওশাদ সিদ্দিকীও আলিয়ার প্রাক্তনী এবং ছাত্রনেতা আনিস খানের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের রক্তদান উৎসবের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রাজ্যে যে পরিমাণ রক্তের চাহিদা রয়েছে সেই হিসেবে জোগান নেই। রক্ত দিলে যেমন অন্যের জীবন বাঁচবে তেমনি নিজ স্বাস্থ্যেরও উপকার হয়।
মুমূর্ষ রোগীদের সাহায্যার্থে ছাত্র-যুবদের রক্তদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার চাইলে আনিস খান হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা সম্ভব, অন্যথায় বিচার পেতে সমস্যা হবে। তিনি অনুরোধ জানান, আনিস খান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী হাসনুহানা খাতুন, ইসরাত জাহান’দের কথায় যেহেতু আমরা নার্সিংয়ের ছাত্রী তাই ভালো করেই রক্তের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বুঝি। তাই রক্তদান উৎসবে শামিল হয়ে রক্তদান করলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া মাসুদুর রহমান বলেন, আনিস খানের খুনের ঘটনায় আমরা আগে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করেছি। এবার তারই অংশ হিসাবে রক্তদান উৎসব করলাম। আলিয়ার গবেষক-ছাত্র মিরাজুল ইসলাম বলেন, আনিস খুনের মূল সাক্ষী তথা তাঁর ভাই সালমানের ওপরে প্রাণঘাতী হামলা, গর্ভপাতে তাঁর স্ত্রী’র ভ্রূণ হত্যায় জড়িত জঘন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
আনিস খুনের সিবিআই তদন্ত ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজপথে নামবে আলিয়ার শিক্ষার্থীরা।