পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আদালত অবমাননার মামলা। আদালত অবমাননার মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, -‘আগামী ২৭ জুনের মধ্যে কমিশনকে সমস্ত বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে’। আগামী ২৮ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিন পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলায় শুনানির প্রথম পর্বে প্রধান বিচারপতি কমিশনের কাছে জানতে চান, -‘পঞ্চায়েত ভোটের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি কী?’ কমিশনের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, -‘কেন্দ্রীয় সরকার ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী যে কোনও মুহূর্তে পাঠাবে বলে জানিয়েছে। বাকি ৪৮৫ কোম্পানির জন্য কমিশন শুক্রবারই কেন্দ্রের কাছে চিঠি দিয়েছে’। কমিশনের আইনজীবীর দাবি,-‘ কমিশনের তরফে ইচ্ছাকৃত ভাবে দেরি করা হয়নি। তাই আদালত অবমননার এই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক’। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, -‘ ২১ জুনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে কমিশন এখনও রিপোর্ট পেশ করেনি। তা হলফনামার আকারে পেশ করা উচিত ছিল। নজরদারির জন্য কমিশন কী পদক্ষেপ করেছে, তাও স্পষ্ট নয়। কমিশনের বিভিন্ন পরিকল্পনার সম্পর্কে আদালতের ধারণা স্বচ্ছ নয়। এর পাশাপাশি সাড়া রাজ্যে ২০৫৮৫ জন প্রার্থী কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করল, কমিশনকে হলফনামায় তারও ব্যাখ্যা দিতে হবে’। একই সঙ্গে কমিশন ইচ্ছাকৃত ভাবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে কি না তাও হলফনামায় জানাতে হবে বলে আদালত জানিয়ে দিয়েছে।মামলাকারী শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী এদিন বলেন, -‘ গত ১৩জুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কমিশন তা করেনি।
এর ফলেই মনোনয়ন পর্ব অবাধ ও শান্তিপূর্ণ থাকেনি।অথচ ভোটের আর মাত্র দু সপ্তাহ বাকি”। প্রধান বিচারপতি জানান, -‘ এ ব্যাপারেই কমিশনকে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেনি বলে অনেক প্রার্থী আদালতে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিপুল সংখ্যক মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে, এই সম্পর্কেও কমিশনের হলফনামা তলব করা হয়েছে’। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে কমিশনের তরফে জানানো হয়, -‘ পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য তারা সব রকমের পদক্ষেপ করবে। ইতিমধ্যে ২৭৩ জন ডবলুবিসিএস অফিসার এবং ২২জন আইএএস অফিসারকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে’।