পুবের কলম প্রতিবেদক: বিধানসভায় ভরাডুবির পরেই বেআব্রু হয়ে পড়েছিল বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরীণ কাজিয়া। আর মোদি মন্ত্রিসভায় রদবদলের পরে তা তুঙ্গে উঠেছে। প্রকাশ্যেই শুরু হয়েছে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি। দলীয় অনুশাসনের তোয়াক্কা না করে বেসুরো গাইছেন মন্ত্রিসভা থেকে ছাঁটাই হওয়া বাবুল সুপ্রিয়, যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা। সোমবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করে সরাসরিই বাবুল-সৌমিত্রদের বিরুদ্ধে নালিশ জানালেন বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া দিলীপ ঘোষ। দুই নেতার ইদানিং বেফাঁস মন্তব্য পক্ষান্তরে দলেরই ক্ষতি করছে বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। দুই নেতাকে ডেকে সংযত হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার জন্যও শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আর্জি জানিয়েছেন।
দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে একান্ত বৈঠকের জন্য শনিবার রাতেই দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের জানিয়ে গিয়েছিলেন, রবিবার সকালেই নাড্ডাজির সঙ্গে বৈঠক। যদিও রবিবার দিনভর দিল্লিতে অপেক্ষা করলেও দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের জন্য সময় পাননি। অবশেষে সোমবার ওই বৈঠক করেন। বিধানসভা ভোটে ভরাডুবি ও দলের ভাঙন রুখতে সাংগঠনিক রদবদল হতে পারে বলে জল্পনা চলছিল। নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকের পরে সেই জল্পনা বাতিল করে দিয়েছেন, বঙ্গ বিজেপি সভাপতি। সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে কোনও কথা হয়নি।
তবে বাবুল সুপ্রিয়-সৌমিত্র খানদের ইদানিং বেফাঁস মন্তব্য নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন দিলীপ। এ প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বলেছি, অনেকেই ভিতরের কথা বাইরে বলছেন। আদতে তাঁরা দলের ক্ষতিই করছেন। এর ফলে যাঁরা শৃঙ্খলাপরায়ন কর্মী, তাঁরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। অবিলম্বে এটা বন্ধ হওয়া ্-উচিত।’ দলীয় অনুশাসন যাঁরা ভাঙছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারির সুরে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি বলেন, ‘এঁদের বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি রয়েছে। না বুঝলে, তখন দেখা যাবে। দলের চেয়ে কেউ বড় নয়।’ দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে আর কি-কি বিষয়ে আলোচনা হলো জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিধানসভা ভোটের পরে আমাদের বহু কর্মী তৃণমূলের হিংসার শিকার হয়েছেন। কিভাবে আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো যায়, তৃণমূল সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে মানুষকে সংগঠিত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছি। বাংলায় আগামী দিনে দল কোন পথে চলবে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’ তাঁর সভাপতি পদ থেকে সরে যাওয়া নিয়ে যে জল্পনা চলছে সে প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি সভাপতির সাফ জবাব, ‘এখনও সভাপতি আছি। দল যতদিন চাইবে থাকব। দল যখন সরিয়ে দেবে, তখন সরে যাব।’