নয়াদিল্লি,১১ জুলাই: করোনা সংকটকালেও বিরুদ্ধ পরিস্থিতি উপেক্ষা করে মধ্য প্রাচ্যের বাহরাইনে গেল ভারতের আম। শনিবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রক জানিয়েছে, কোভিড সংকটকালেও এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই মরশুমে আমের এই রফতানি ভারতকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে আরও প্রসারিত করল। জিআই স্বীকৃত ফাজিল প্রজাতির আম বাহরাইনে রফতানি করা হয়েছে। কোভিডকালেও প্রথমবার ২.৫ মেট্রিক টন আম রফতানি করা হল। এটা ভারতের কাছে নিঃসন্দেহে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। রফতানিকৃত আমগুলির মধ্যে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা ও চিত্তোর জেলার জিআই সার্টিফাইড বঙ্গানপল্লি এবং বিভিন্ন জাতের সুবর্ণরেখা।এছাড়াও জিআই সার্টিফাইডযুক্ত যে নয়টি প্রজাতির আম রফতানি করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে খিরসাপতি (মালদা, পশ্চিমবঙ্গ), লক্ষণভোগ (মালদা, পশ্চিমবঙ্গ), ফজলি (মালদা, পশ্চিমবঙ্গ), দুশেরি (মালিহবাদ, উত্তর প্রদেশ) এবং আম্রপালী এবং চৌসা (মালদা, পশ্চিমবঙ্গ) এবং ল্যাংড়া (নদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ)। কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্য রফতানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এপিইডিএ) অপ্রচলিত অঞ্চল ও রাজ্য থেকে আমের রফতানি বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই একটি ভার্চুয়াল ক্রেতা-বিক্রয়কারীদের কর্মসূচিরও আয়োজন করে এপিইডিএ।
সম্প্রতি এপিইডিএ বাহরাইনের কাতার, দোহায় আমের প্রচার কর্মসূচির আয়োজন করে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশের জিআই সার্টিফিকেট সহ নয়টি জাতের আমও প্রদর্শিত হয়। এ বছরের জুন মাসে বাহরাইনে এক সপ্তাহব্যাপী ১৬ প্রজাতির ভারতীয় আমের প্রচার কর্মসূচি চলে। সেখানে স্থান পায় জিআই সার্টিফাইড খিরসপতি এবং লক্ষ্মণভোগ (পশ্চিমবঙ্গ), জারদালু (বিহার)।
প্রসঙ্গত, সুমিষ্ট ও সুস্বাদু ফল হিসেবে আম নিজ গুণে দেশ, বিদেশে সমানভাবে সমাদৃত। ভারতে আমকে ‘ফলের রাজা’ হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলিতে কল্পব্রক্ষ (শুকনো গাছ) বলা হয়। ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যে আমের উৎপাদন থাকলেও উত্তর প্রদেশ, বিহার, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটকের ফলের মোট বড় অংশ উৎপাদিত হয়। ভারতে থেকে বিদেশে রফতানি হওয়া আমগুলির এক নম্বর সারিতে রয়েছে আলফোনসো, কেশার, তোতাপুরী। তবে শীর্ষস্থানীয় স্থান দখল করেছে বঙ্গপল্লি বা বঙ্গানপল্লি। আমের রফতানি মূলত তিনটি আকারে হয়, তাজা আম, আমের সজ্জা এবং আমের টুকরো। পূর্ব অঞ্চল থেকে বিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে আমের রফতানির সম্ভাবনা বাড়ানোর একটি বড় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলা।