পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দোহায় মোসাদের একটি দল আলোচনা চালাচ্ছিল কাতার, মিশর ও আমেরিকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ‘অচলাবস্থা’ সৃষ্টি হওয়ায় মোসাদের দলকে তেলআবিবে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
এর মাধ্যমে মূলত হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে আপাতত নতুন করে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যুদ্ধের শুরুর দিকের মতো গাজায় আবারও নির্বিচারে বিমান হামলা চালাবে দখলদার ইসরাইলি সেনারা। এ ক্ষেত্রে নতুন এক ভয়ংকর ডেথ অপারেশনেরও পরিকল্পনা করছেন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ারের (১৯৬৯-১৯৭৪) পদাঙ্ক অনুসরণ করে ‘অপারেশন রেথ অব গড’-এর মতো অভিযান চালাতে চান বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে হামাস নেতাদের হত্যার এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মোসাদের প্রাক্তন অধিকর্তা এফ্রেইম হ্যালেভি এই অভিযান সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি হতে পারে বলে তার আশঙ্কা। হ্যালেভির মতে, বিশ্বজুড়ে হামাস নেতাদের নির্মূল করলে ইসরাইলের ঝুঁকি দূর হবে না। মোসাদের হত্যার তালিকায় থাকা কিছু বড় নাম হল ইসমাইল হানিয়া, মুহাম্মদ দেইফ, ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং খালেদ মেশাল। হামাস ও ফিলিস্তিনকে পুরোপুরি ‘শেষ’ করে দিতে চায় ইসরাইল। তাই সিভিলিয়ানদের পাশাপাশি নেতাদেরকেও হত্যার টার্গেট নিয়েছে মোসাদ। ইসরাইলের গোয়েন্দা সংগঠন ‘মোসাদ’ পৃথিবীর সবচেয়ে দুধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি। এই সংগঠন ইহুদি জাতির জন্য ‘বিপজ্জনক’ যেকোনও ব্যক্তিকে হত্যা করাকে নিজেদের দায়িত্ব বলে মনে করে।
১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিক চলাকালে ইসরাইলের এগারোজন অ্যাথলিটকে ‘ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর’ নামে এক ফিলিস্তিনি সংগঠন প্রথমে অপহরণ ও পরবর্তীতে খুন করে। ইতিহাসে একে ‘মিউনিখ হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর ছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন ফাতাহ-এর সহযোগী সংগঠন। মিউনিখের এই ঘটনার পরপরই ইসরাইলের সেই সময়ের মহিলা প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার এক ভয়ংকর ডেথ অপারেশনের দায়িত্ব দেন মোসাদ ও ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সকে (আইডিএফ)। অপারেশনের নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রেথ অব গড’। একের পর এক অপারেশনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক নেতাদের (পিএলও) হত্যা করতে থাকে মোসাদ। নেতানিয়াহুও এবার সেই পথে হাঁটছেন!