উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: এবার জয়নগরের দলুয়াখাঁকিতে পুলিশি বাধার মুখে সমাজকর্মী অম্বিকেশ মহাপাত্র। নওশাদ সিদ্দিকি, কান্তি গাঙ্গুলি, সায়ন ব্যানার্জী, সুজন চক্রবর্তীদের পর এবার দলুয়াখাঁকি যাওয়ার পথে বাধা পেলেন সমাজকর্মী তথা অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র ও তাঁর কর্মীরা। অভিযোগ, দলুয়াখাঁকি থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে মনসাতলার কাছে তাঁদের পথ আটকে দেয় পুলিশ। তারা জানিয়ে দেন, ‘গ্রামে যাওয়া যাবে না।’ এনিয়ে কিছুক্ষণ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে একপ্রস্থ তর্কাতর্কি হয় অম্বিকেশ মহাপাত্রের। ফলে মাঝপথ থেকেই ফিরতে হয় তাঁদের। জয়নগরের ঘটনায় পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও দায়ের করেছে সিপিএম।
উল্লেখ, গত ১৩ নভেম্বর ভোরে নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সইফউদ্দিন লস্করের। পালটা জনতার মারে মৃত্যু হয় এক অভিযুক্তের। এরপর দলুয়াখাঁকি গ্রামের একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, অশান্তির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে গ্রাম। পরে পুলিশের সাহায্যে গ্রামে ফিরলেও আগুনের গ্রাসে বাড়িঘর হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে পরিবারগুলি।
ঘটনার পর পরই ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁকেও গ্রামে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। প্রতিবাদে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান নওশাদ। পরে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বাম প্রতিনিধিদলকেও গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তা নিয়েও তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এরপর সোমবার ‘আমরা আক্রান্ত’ সংগঠনের তরফে অম্বিকেশ মহাপাত্ররা দলুয়াখাঁকিতে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। পুলিশ জানায়, ‘বহিরাগতদের গ্রামে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা আছে। তাই তাঁরা যেতে পারবেন না।’
অম্বিকেশবাবু পুলিশ আধিকারিকদের বলেন, তাঁরা মানবাধিকার রক্ষার কাজ করে থাকেন। সেই সংগঠনের পক্ষ থেকে সাতজন গ্রামে গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু পুলিশ কোনওমতেই অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ। ফলে মনসাতলা থেকেই ফিরতে হয় তাঁদের। আর অশান্তি ও গন্ডগোল এড়াতে এলাকায় এখনো পুলিশ মোতায়েন করা আছে।