পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সমাজ আধুনিক হয়েছে। চাঁদে গেছে চন্দ্রযান-৩। দেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে বার বার ডিজিটাল ইন্ডিয়া থেকে আত্মনির্ভর ভারতের কথা শোনা গেছে। কিন্তু সেই ভারতেই বার বার কোনও সামান্য কারণেই সমাজের রক্তচক্ষুর খাঁড়া নেমে এসেছে দলিত সম্প্রদায়ের ওপরে। আধুনিক সভ্য ভারতে এখনও কি অচ্ছুৎ দলিতরা! সেই প্রশ্নই উঠে এসেছে বিভিন্ন কদর্য ঘটনার মধ্য দিয়ে। ঝাড়খণ্ডের গ্রাম প্রধানের মেয়েকে বিয়ে করার অপরাধে একঘরে (বয়কট) হতে হল এক দলিত পরিবারকে। ঘটনায় পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ওই নব বিবাহিত দম্পতি ধানবাদ মহিলা থানার দ্বারস্থ হয়েছেন।
ধানবাদের জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বরোরা থানার অন্তর্গত দারিদা পঞ্চায়েত। সেই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতীদেবীর মেয়েকে বিয়ে করেন করণ কালিন্দী গ্রামের দলিত পরিবারের ছেলে। এই অপরাধে ওই পরিবারকে একঘরে করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই দলিত পরিবারের অভিযোগ, ছেলে বিয়ে করার পরেই গ্রামের মানুষ স্থানীয় জলাধার থেকে পানীয় জল, পুকুরে স্নান, রেশন, দোকান বাজার থেকে কেনাকাটা সব কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। ছেলের মা সুমিত্রাদেবী জানান, প্রায়শই গ্রামের মানুষরা তাদের শাসাতে থাকেন ছেলে-বৌমাকে গ্রামে না ঢুকতে দিতে।
দারিদা পঞ্চায়েত প্রধান পার্বতী দেবীর মেয়ের সঙ্গে বিয়ের পর দুই পরিবারের মধ্যে সালিশি সভায় সব কিছু মিটমাট করে নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রামে ফেরার পরেই সমাজে দলিত পরিবারকে বয়কট করা হয়।
এদিকে গ্রাম প্রধান পার্বতীদেবী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পার্বতীদেবী জানিয়েছেন, তিনি নিজে তাঁর মেয়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছেন। বিয়ের পর থেকে আর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। কিন্তু একই সমাজে বাস করে, পানীয় জল থেকে শুরু করে স্নান করা বন্ধ করতে পারি না। কিন্তু সকলেরই কোনটা ঠিক বা ভুল বলার অধিকার আছে’।
বরোরা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক নন্দু পাল জানিয়েছেন, নির্যাতিতার পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ এসেছে যে তাদের গ্রাম ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।