মোল্লা জসিমউদ্দিন: এক সংখ্যালঘু দম্পতির উপর নির্যাতনের অভিযোগের ভিক্তিতে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।সবনাজ খাতুন নামে এক মহিলা ইসলামপুর থানায় দুই সিভিক ভলান্টিয়ার, দুই সাব-ইন্সপেক্টর, দুই সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর এবং ইসলামপুর মহকুমা সংশোধন কেন্দ্রের এক অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত ২৭শে অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের ইসলামপুর শহরে এক মুসলিম দম্পতির উপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট এর দারস্থ হন নির্যাতিতা। কলকাতা হাইকোর্ট ইসলামপুর থানার আইসি সহ সাত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেয়। আদালত সুত্রে প্রকাশ, চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত দম্পতি দাবি করেন যে তাদের হেফাজতে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে।মোহাম্মদ শাহজামাল জানিয়েছেন তার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের পর, শাহজামালের স্ত্রী সবনাজ খাতুন গত রবিবার ইসলামপুর থানায় দুই সিভিক ভলান্টিয়ার, দুই সাব-ইন্সপেক্টর, দুই সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর এবং ইসলামপুর মহকুমা সংশোধন কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তৃণমূল কাউন্সিলর এবং আইনজীবী গুরুদাস সাহার বাড়িতে একটি চুরির সূত্র ধরে এই ঘটনার সূত্রপাত৷ প্রায় ৬ লক্ষ টাকার সোনার গয়না ও অন্যান্য জিনিস চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ। একই এলাকার বাসিন্দা শাহজামাল ও তার স্ত্রী সবনাম খাতুনকে চুরির সন্দেহে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কয়েকদিন পর সবনাম খাতুনকে মুক্তি দেওয়া হয়। শাহজামালকে ইসলামপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে তাকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়। পুলিশি হেফাজতে তাকে নির্দয়ভাবে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তার শরীরে গুরুতর আঘাতের কারণে, ২ নভেম্বর পুলিশ শাহজামালকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করতে বাধ্য হয়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে ২১ ডিসেম্বর শাহজামালকে জামিন দেন নিম্ন আদালত।
শাহজামালের পরিবারের অভিযোগ, ‘পুলিশের অত্যাচারে’ তার কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। বিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন তাঁর স্ত্রী। গত ৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট ইসলামপুর থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের নির্দেশ দেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশে গত রোববার ইসলামপুর থানায় সাত পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সবনাজ খাতুন।
সবনাজ জানান, “আমরা কোনোভাবেই চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। কিন্তু পুলিশ মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ও আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে। এরপর কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তারা আমার স্বামীকে অমানবিক নির্যাতন করে। আমার স্বামীর কিডনি পুলিশের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় বিচারের আশায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। আদালতের নির্দেশে আমি ইসলামপুর থানায় পুলিশ অফিসারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।”