পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এতদিন দেশে হিন্দুত্ববাদীরা মানব শরীরের যাবতীয় অসুখের নিরাময়ের জন্য মহৌষধী হিসেবে তুলে ধরত গোমূত্রকে। ২০১৪ সালের পর বিজেপি তথা আরএসএস-এর অন্যান্য শাখা সংগঠনের নেতারা প্রকাশ্যে এসে গর্বের সঙ্গে বলতেন তিনি গোমূত্র পান করে থাকেন।
কোভিড অতিমারির সংক্রমণেও বহু গোভক্তকে বলতে শোনা গেছে যে গোমূত্র পান করলে করোনা নাকি সেরে যায়। বহু মানুষ তাদের দাবির ফাঁদে পা দিয়ে অকালে জীবন হারিয়েছেন। কিন্তু ইন্ডিয়ান ভেটেরিন্যারি রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা আইভিআরআই-এর এক সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রে প্রকাশ যে, গোমূত্রে একাধিক ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকে, যার ফলে গোমূত্র মানুষের জন্য পান করার যোগ্য নয়। গোমূত্র এবং ষাঁড়ের মূত্রের নমুনা সংগ্রহ করে আইভিআরআই গবেষণা চালিয়েছিল, যাতে দেখা যাচ্ছে অন্তত ১৪ ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সেই মূত্রে।
পাশাপাশি, গোমূত্রে এসচেরিচিয়া ফোলি ব্যাকটেরিয়াম নামক একটি জীবাণু পাওয়া গেছে, যার ফলে মানুষের পেটে ভয়ানক রকমের ইনফেকশন হয়। গরু, ষাঁড় এবং মানুষের ৭৩ রকমের প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাতে দেখা যাচ্ছে বরং ষাঁড়ের মূত্রে ব্যাক্টেরিয়াকে ধ্বংস করার মতো উপাদান রয়েছে। একথা জানিয়েছেন যার নেতৃত্বে গবেষণা চালানো হয়েছিল সেই ভোজরাজ সিং।
ইনস্টিটিউটের মহামারি বিদ্যার প্রধান সিং তিনজন পিএইচডি ছাত্রকে দিয়ে ২০২২-এর জুন থেকে ২০২২-এর নভেম্বর পর্যন্ত তিন ধরনের গরুর মূত্র নিয়ে গবেষণা চালান।
এই তিন প্রজাতির গরু হল ‘শাহিওয়াল’, ‘থারপরকার’ এবং ‘বিন্দাবনী’। সিং বলেন, অনেকেই দাবি করে থাকেন গোমূত্রকে ‘বিশুদ্ধ’ করে (ডিসটিলড ইউরিন) পান করলে নাকি ক্যানসারের মতো জটিল রোগও সেরে যায়। সিং বলেন, আমরা ‘ডিসটিলড’ গোমূত্র নিয়েও গবেষণা চালাচ্ছি। দেখা যাক কী ফলাফল আসে।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র সরকার ক্ষমতায় আসার পর গোমূত্র বোতলে ভরে বিক্রি করা হচ্ছে, বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে। এর জন্য কেউই ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (এফএসএসএআই) অনুমতি বা ট্রেড মার্ক দেওয়ার ও প্রয়োজন বোধ করেনি।