পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: বিলকিস বানু গণধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের জেলমুক্তি নিয়ে সরগরম গুজরাত তথা দেশের রাজনীতি থেকে সমাজ। গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধী শিবির থেকে শুরু করে চেতনাসম্পন্ন বহু মানুষ। এ দিকে সমাজকর্মী, ইতিহাসবিদ-সহ বহু মানুষ ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়ে বিবৃতি জারি করেছে। এবার তা গড়াল রাইসিনা হিলস পর্যন্ত। বিলকিস মামলায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে চিঠি লিখলেন গুজরাতের তিন কংগ্রেস বিধায়ক।
সেই পত্র মারফত বিলকিস বানুর গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্তদের এইভাবে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
২০০২ সালের গুজরাত হিংসার সময় অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানুকেও ধর্ষণ করা হয়েছিল। তাঁর পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করা হয়েছিল। এই ঘটনায় ১১ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। তাদের যাবজ্জবীন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল মুম্বইয়ের এক বিশেষ আদালতে।
১৫ আগস্ট গুজরাত সরকারের তরফে তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৬ আগস্ট এই খুনি-ধর্ষকরা মুক্তি পায়। গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা হয়েছে। এবার এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে সরাসরি রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস বিধায়করা।
আহমদাবাদের দরিয়াপুরের কংগ্রেস বিধায়ক গিয়াসুদ্দিন শেইখ ও জামালপুরের বিধায়ক ইমরান খেদাওয়ালা এবং বাঙ্কানেরের কংগ্রেস বিধায়ক জাভেদ পিরজাদা দোষীদের জেলমুক্তিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছেন।
রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে কংগ্রেস বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন শেইখ চিঠির একটি ছবি পোস্ট করেন তাঁর ট্যুইটার হ্যান্ডেলে। গুজরাতের বিধায়কদের এই চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেদিন মহিলাদের সম্মানের কথা বলছেন, তখন তাঁর নিজের রাজ্যের বিজেপি সরকার বিলকিস বানুর ধর্ষকদের কারাগার থেকে ছেড়ে দিয়েছে। এই ঘটনা আরও বেশি হতাশাজনক। এমনটাই বলেছেন কংগ্রেস বিধায়করা। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে এই ধরনের ‘কঠোর অপরাধীদের’ মুক্তি দেওয়া, তাদের স্বাগত জানানো এবং অভিনন্দন জানানো খুব অমানবিক। গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্ত একটি ‘বিপজ্জনক নজির’ সৃষ্টি করল।