রুবাইয়া জুঁই, শিলিগুড়িঃ উত্তরের অন্যতম ঐতিহ্য দার্জিলিং চায়ের সুবাস দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছে অনেক আগেই।আর খুব কম লোকই আছেন যাদের সকালের ঘুম ভাঙে না চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে।আর সেটা যদি হয় দার্জিলিং চা হয় তাহলে তো আর কথাই নেই।তবে এবার দার্জিলিং তথা উত্তরবঙ্গের মুকুটে আরও একটি পালক যোগ হতে চলেছে। যার জন্য দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামীণ এলাকায় পুরোদমে শুরু হয়েছে কফির চাষ।সাত বছর আগে জিটিএ এবং প্রশাসনের উদ্যোগে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হলেও বাণিজ্যিক সাফল্য পুরোপুরি আসেনি কফি চাষে। এ বার সেই লক্ষ্যেই উদ্যোগী হল রাজ্য সরকারের শিল্পোন্নয়ন নিগম। সঙ্গী হচ্ছে বণিক সভা সিআইআই। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের অধিকর্তা তথা প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে নানা আলোচনার মধ্যে পাহাড়ের কফিকে বিশেষ ভাবে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজে নামার সিদ্ধান্তের কথা জানান।রাজীব সিংহ বৈঠকে বলেছেন, ছোট ছোট চাষিদের এক জোট করে সরকারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাণিজ্যিক সাফল্য দেখানোর কাজ সরকার এবং শিল্প সংগঠনগুলি করছে। সেখানে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশে কফি চাষ নতুন দিশা দেখাতে পারে।
এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন শিলিগুড়িতে একটি ফার্নিচার পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা করছে বলেও জানান তিনি।
কালিম্পং জেলায় প্রায় ১,১৯৩ জন কৃষক ৩৫০ একর জমিতে কফি চাষ করেন। প্রশাসন এবং গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল প্রশাসন এই প্রচেষ্টাটিকে সমর্থনও করছে। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে এই পরিকল্পনা গ্রামীণ উদ্যোক্তা হাব মডেলের একটি অংশ, যা স্থানীয় পণ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করবে। এছাড়াও কফি কৃষকদের সাহায্যের জন্য, রাজ্য একটি সাধারণ সুবিধা কেন্দ্র (সিএফসি) স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে যেখানে তারা বাছাই, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং প্যাকেজিংয়ের মতো সুবিধা পেতে পারে বলে তিনি জানান।সভায় সিনহা আরও উল্লেখ করেছিলেন যে শিলিগুড়িতে অনুমোদিত শিল্প উদ্যান প্রকল্পের আওতায় একটি ফার্নিচার পার্ক করা হবে এবং আসবাবপত্র শিল্পের প্রায় ২০ জন উদ্যোক্তা সেখানে ইউনিট খুলবেন।অন্যদিকে সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান সঞ্জয়
টিব্রুওয়াল বলেন, ‘‘কো-অপারেটিভ পদ্ধতিতে চাষ করে পাহাড়ি চাষিরা অন্য চাষে সাফল্য পেয়েছেন। এ বার কফি চাষের পালা। বহুদিন ধরে অল্পবিস্তর চাষ, পরীক্ষামূলক কাজ হয়েছে। এ বার পুরোদমে বাণিজ্যিক ভাবে করা হবে।’’ ফলে কফি চাষকে কেন্দ্র করে আশার আলো দেখছেন পাহাড়ের মানুষ।