পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মহাজাগতিক জগতে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে বিরল ঘটনা। যার মধ্যে বহু ঘটনার খবর আমাদের কাছে এসে পৌঁছলেও অনেক কিছুই আমাদের অজানা। গতকাল চাঁদ ও শুক্রের এক বিরল দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে পৃথিবীর মানুষ। চাঁদের তলায় বিন্দুর মতো রয়েছে শুক্র। চন্দ্রবিন্দুর মতো আকার নেওয়া এক দৃশ্য দেখে মানুষ অবাক হয়ে যায়। ফের আজ অপর এক মহাজাগতিক মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকবে গোটা বিশ্ব। পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে যাবে একটি গ্রহাণু, যার পোশাকি নাম ২০২৩ ডিজেড-২। যদিও ওই গ্রহাণুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘সিটি কিলার’ নামেই। এমনটাই জানাচ্ছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি।
মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, ওই গ্রহাণুর আয়তন ৪০-১০০ মিটারের মতো। যা পৃথিবীর যে কোনও একটি শহরকে ধ্বংস করার পক্ষে যথেষ্ট ক্ষমতাসম্পন্ন। তবে ওই গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। সিটি কিলারের গতিপথ চাঁদ ও পৃথিবীর মাঝখান দিয়ে। পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে এক লক্ষ ৬৮ হাজার কিলোমিটার দূর দিয়ে উড়ে যাওয়া ওই গ্রহাণুকে সন্ধ্যার আকাশে দেখা যাবে বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবারের সন্ধ্যায় চাঁদ ও শুক্রের মুখোমুখি হওয়ার ওই দৃশ্য দেখার পর ‘সিটি কিলার’ দর্শন নিয়ে পৃথিবী জুড়েই চড়ছে উত্তেজনার পারদ। তবে ফের ২০২৬ সালে সিটি কিলার ফিরে আসবে পৃথিবীতে। তখন মানুষ একে জানবে গ্রহাণু ২০২৩ ডিজেড-২ নামে।
গ্রহাণুটির আকার মাত্র ১৩১ থেকে ৩২৮ ফুট। বায়ুমণ্ডলে এ আকারের অসংখ্য গ্রহাণু থাকলেও, এটি নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা হচ্ছে।
কারণ হিসেবে জ্যোতির্বিদ্যা বিশেষজ্ঞ রিচার্ড মইসি বলেছেন, ‘এই গ্রহাণুটির বিশেষত্ব হল এটি অনেক বিরল। এই আকারের একটি বস্তু পৃথিবীর এত কাছ দিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক ঘটনা নয়। প্রতি দশ বছরে একবার এমনটি হয়।’
জ্যোতির্বিদ্যা বিশেষজ্ঞ রিচার্ড মইসির জানিয়েছেন, এ গ্রহাণুটির নামের পাশে সিটি কিলার শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে। কারণ পৃথিবীতে প্রভাব রাখা দু’টি গ্রহাণুর ওপর ভিত্তি করে।
১৯০৮ সালে তুংসা ইভেন্টের সময় একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে একটি শকওয়েভ বা তরঙ্গ পাঠিয়েছিল। যার প্রভাবে সাইবেরিয়া বনের ২ হাজার কিলোমিটার অঞ্চল উজাড় হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে একটি লোহার গ্রহাণু যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অ্যারিজোনাতে ১ দশমিক ২ কিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে ১৮০ কিলোমিটার গভীর খাদের সৃষ্টি করেছিল।
মইসি জানিয়েছেন, যখন মহাকাশের কোনও বস্তু পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং ভূমিতে সজোরে আঘাত হানে জনমানবশূন্যস্থানে, তাহলে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু যদি এটি কোনও শহরে আঘাত হানে তাহলে ওই শহরটি ধ্বংস হয়ে যাবে। যার প্রভাবে শহরটি থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে হবে। যেহেতু এ আকারের গ্রহাণুর আঘাতে কোনও শহর ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, তাই এগুলোকে সিটি কিলার হিসেবে অভিহিত করা হয়।