পারিজাত মোল্লা: মুর্শিদাবাদের ভুয়ো শিক্ষক মামলায় স্কুলের সহকারী স্কুল পরিদর্শক গ্রেপ্তার করল রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি। সোমবার অভিযুক্তকে বহরমপুর আদালতে তোলা হয়। তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।এদিনই এই তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে জমা করল সিআইডি।
মুর্শিদাবাদে গোথা স্কুলে প্রধান শিক্ষকের ছেলের বেনিয়মে চাকরি পাওয়ার মামলায় শিক্ষা দফতরের কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানালো সিআইডি। এদিন এই সংক্রান্ত একটি মামলায় রিপোর্ট জমা দিল স্কুল শিক্ষা দফতর। রিপোর্টে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
এদিন বিচারপতির বিশ্বজিত্ বসুর এজলাসে রিপোর্ট জমা দেন তদন্তকারীরা।সিআইডি-র দাবি, -‘ এই মামলায় স্কুল শিক্ষা দফতরের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে’।
সিআইডি-র আইনজীবী জানান, -‘এই সপ্তাহের মধ্যে তদন্তকারীরা অনুমতি পত্র হাতে পেয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে’। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২২ নভেম্বর।
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিআইডি-র নজরে পড়ে মুর্শিদাবাদের সুতির গোঠা এ আর রহমন হাইস্কুল। অভিযোগ ওঠে, এই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক, তাঁর ছেলেকে বেনিয়মে নিজের স্কুলে চাকরি দিয়েছেন। শিক্ষক অনিমেশ তিওয়ারির বিরুদ্ধে নথি জাল করে স্কুলে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই মামলায় তদন্ত শুরু করে সিআইডি।তদন্তে নেমে বেশ কয়েকবার ওই স্কুলে তল্লাশি চালান আধিকারিকরা। গ্রেফতার করা হয় অনিমেশের বাবা অর্থাত্ ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে। কিন্তু পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন অনিমেশ। তাঁকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। শেষমেশ পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে ভোট দিতে এসে গ্রেফতার হন অনিমেশ।এই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে নথি জাল করে বাবার স্কুলে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এই মামলায় পূরবী বিশ্বাস, অঞ্জনা মজুমদার ও নিত্যগোপাল মাঝি নামে তিন জনকে গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। তিনজনের মধ্যে পূরবী বিশ্বাস একজন অবসরপ্রাপ্ত ডিআই। বাকি দুইজন ক্লার্ক পদে কর্মরত ছিলেন। তদন্তে জানা যায়, যখন অনিমেশকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্কুলে নিয়োগ করা হয়, তখন তাঁরা তিন জনই কর্মরত ছিলেন।এর আগে বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুর এজলাসে রিপোর্ট জমা করেছিলেন তদন্তকারীরা। সেখানে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফেও জানানো হয়েছিল, অনিমেশ তিওয়ারির নামে কোনও সুপারিশ করা হয়নি। এবার স্কুল শিক্ষা দফতরের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়া শুরু করলেন তদন্তকারীরা। এদিন সহকারী স্কুল পরিদর্শককে গ্রেফতার করে বহরমপুর আদালতে পেশ করা হলে ধৃতের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ জারি করেছে নিম্ন আদালত।