পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন; চিন ও বিদেশে বসবাসরত উইঘুর মুসলিমদের ওপর গোপনে নজরদারি চালাতে স্পাইওয়্যার ব্যবহার করছে জিনপিং সরকার। সোজা কথায়; উইঘুরদের ফোন ও কম্পিউটার হ্যাক করে তাদের সমস্ত ব্যক্তিগত অবস্থান ও নথি সম্পর্কে জানছে বেজিং।
চিনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত টার্কিশ মুসলিমরাই উইঘুর নামে পরিচিত। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘ প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী; শিনজিয়াংয়ে বছরের পর বছর রে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ চালানো হচ্ছে। তবে প্রতিবারের মতো সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে চিন বলেছে; উইঘুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে; তাদের কোনও ক্ষতি করা হয়নি।
চিনের এই দাবি যে এক শতাংশও সত্য নয়; তা জানা যায় বিভিন্ন মানবাকিার সংস্থার রিপোর্ট ও শিনজিয়াং থেকে পালিয়ে আসা উইঘুরদের বয়ান থেকে। উইঘুররা নিজের মুখেই শিনজিয়াংয়ের বন্দি শিবিরগুলির ভয়াবহতার কথা জানিয়েছে। সেসব শিবিরে উইঘুর ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে পশুর মতো ব্যবহার করা হয়।
উইঘুর মহিলাদের ধর্ষণ করে চিনা অধিকারিকরা। মহিলারা গর্ভবতী হলে পেট কেটে সেই বাচ্চা বের করে নষ্ট করে দেওয়া হয়। উইঘুরদের বংশ বিনাশেও নয়া নীতি নিয়েছে চিন। এক্ষেত্রে বিশেষ ওষুধ মহিলাদের যোনিতে প্রবেশ করিয়ে তাদের চিরদিনের মতো বন্ধ্যা করে দেওয়া হচ্ছে।
এভাবে উইঘুরদের বংশ ধ্বংস করতে চাইছে জিনপিং সরকার। এরই পাশাপাশি বন্দি শিবিরে উইঘুরদের ধর্ম পরিবর্তনে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে জানা যায়। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী; উইঘুরদের লোহার চেয়ারে দিনের পর দিন ধরে বেঁধে রেখে তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালায় কর্তৃপক্ষ।
গত মাসে রাষ্ট্রসংঘের অভিযোগপূর্ণ রিপোর্টকে মিথ্যা বলে নস্যাৎ করে দেয় চিন। অবশ্য আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলি চিনকে চাপে রাখতে উইঘুরদের পাশে থেকেছে। মার্কিন সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে; শিনজিয়াংয়ে ‘গহত্যা’ চালিয়েছে চিন।
বৃহস্পতিবার স্যান ফ্রান্সিসকোর একটি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ২০১৮ সালের এক দাবি নিয়ে তদন্ত চালায়।
তদন্তে দেখা যায়; উইঘুর ভাষার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে এমন দু’টি স্পাইওয়্যার রয়েছে যেগুলি চিনা সরকার দ্বারা পরিচালিত হ্যাকার দলের সঙ্গে সম্পর্কিত।
চিনে গুগল প্লেস্টোর নিষিদ্ধ থাকায় প্রত্যেককেই চিনের তৈরি থার্ড পার্টি স্টোর থেকে যেকোনও অ্যাপ ডাউনলোড করতে হয়। ফলে হ্যাকাররা সহজেই উইঘুরদের ঠিকানা; অবস্থান; ফোন কন্ট্যাক্ট; ই-মেল ও ছবি পেয়ে যায়।