পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আজ বহু প্রত্যাশিত টালা ব্রিজের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আড়াই বছরের অপেক্ষার অবসান, পুজোর আগে কলকাতাবাসীকে উপহার, উদ্বোধনে এসে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্রিজ তৈরিতে ৫০৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এখনই বড় গাড়ি নয়, ছোট গাড়ি চলবে। রেলকে ৯০ কোটি টাকা দিতে হয়েছে। আমাদের কাছে উত্তর-দক্ষিণ বলে কিছু নেই।
উল্লেখ্য, প্রায় ৮০০ মিটার লম্বা নতুন টালা রেলওভার ব্রিজের ২৪০ মিটার পুরোপুরি রেলপথের উপরে রয়েছে। এই অংশে কোনও স্তম্ভ বা পিলার নেই। দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতুর মতো এখানে কেবল তারে ঝোলানো সেতু হয়েছে। পুরোটাই কেবল স্টেড। দুইদিকে দুটি করে মোট চারটি স্তম্ভ থাকবে। অ্যাপ্রোচ রোডে মোট বারোটি স্তম্ভ বা পিলার রয়েছে। সেতুটি হয়েছে চার লেনের। সিথি, বরানগর ডানলপ সহ কলকাতার শহরতলী এলাকা থেকে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারে ঢোকার পথ প্রশস্থ করবে।
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পর রাজ্যের সব সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করে রাজ্য সরকার। সেই সময় টালা সেতুরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা পূর্ত দফতরকে জানায়, সেতুটি অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে। সেতুর গায়ে একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ভেঙে নতুন সেতু তৈরি করার প্রস্তাব দেন তাঁরা। এরপর ২০১৯ সালের পুজোর আগে পুরনো টালা ব্রিজের যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়। ২০২০ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে টালা ব্রিজে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়। এবার সেই সেতুর যাবতীয় কাজ এবং কোথাও কোনও ত্রুটি রয়ে গিয়েছে কিনা, তা দেখতে আসার জন্য পূর্ত দফতরের থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে খড়গপুর আইআইটিকে।
সূত্রের খবর, সেখানকার বিশেষজ্ঞরা দেখে যাওয়ার পর, পূর্ত দফতরের থেকে লোডিং টেস্ট করা হয়। রিপোর্টে সবুজ সংকেত মেলায় ব্রিজ খোলার সিদ্ধান্ত হয়। ব্রিজ তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই পুরো টাকাটাই এসেছে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার টার্গেট থাকলেও অতিমারির প্রকোপে পিছিয়ে যায় কাজ। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ভেঙে আজ পুজোর আগে এই সেতুর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।