পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক:প্রত্যাশামতোই আস্থা ভোটে জয়ী হলেন চম্পাই সোরেন। নয়া মুখ্যমন্ত্রীতেই আস্থা রাখল ঝাড়খণ্ড। ৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় আস্থা ভোটে জয়ী হল সোরেন নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। ৪৭ জন বিধায়ক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ২৯টি।ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় মোট আসনের সংখ্যা ৮১। তার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ম্যাজিকফিগার হল ৪১।
অর্থাৎ, ৪১টি ভোট পেলেই চম্পাই সরকারের স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করা যেত। আস্থা ভোটের পর দেখা গেল, ৬’টি ভোট বেশি পেয়েছে নতুন সরকার।মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে হেমন্ত সোরেনের ইস্তফা এবং জমি কেলেঙ্কারি মামলায় তাঁকে ইডি গ্রেফতার করার পর ২ ফেব্রুয়ারি ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন চম্পাই সোরেন। তবে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ নিয়ে গড়িমসি দেখা যায়। যা রাজনৈতিক চর্চার অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল। প্রসঙ্গত, ২৮ জানুয়ারি সকালে নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। তার হাত ধরে আরজেডির সঙ্গে নীতীশের জেডিইউ এর সরকারের পতন হয়। বিকেলেই তিনি শপথ নিয়ে এবার বিজেপির এনডিএর সঙ্গে বিহারে সরকার গড়েন। কিন্তু চম্পাই সোরেনের শপথগ্রহণ নিয়ে সেই চূড়ান্ত ব্যস্ততা দেখা যায়নি। এই দেরি নিয়ে সংসদ থেকে বিরোধীরা ওয়াকআউট করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা প্রধান হেমন্ত সোরেন ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে এই রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। হেমন্ত সোরেন আপাতত ইডির হেফাজতে আছেন। ৩১ জানুয়ারি, হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ১ ফেব্রুয়ারি, রাজ্যের তৎকালীন পরিবহন মন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিশিষ্ট নেতা চম্পাই সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত করেন রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণাণ। শপথ নেওয়ার পর সোরেন বলেন, ‘আমরা হেমন্ত সোরেনের চালু করা কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমি ঝাড়খণ্ডের উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেওয়ার পর, রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণাণ সোরেনকে ১০ দিনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে বলেছিলেন।
সেইমতো নবগঠিত সরকারকে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন চম্পাই সোরেন। এদিন তাঁকে আস্থা ভোটে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল রাঁচির একটি বিশেষ আদালত। রাজ্য বিধানসভায় আস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেন বলেন, আমি গর্ব করে বলছি, আমি হেমন্ত সোরেন পার্ট-২। আমাদের রাজ্যে ১৫০ বছর ধরে খনির কাজ হয়। কিন্তু এখানকার মানুষ এক টুকরো লোহা ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখেনি। আপনারা রাজ্যের যে কোনও গ্রামে গিয়ে দেখবেন, প্রতিটি বাড়ি হেমন্ত সোরেনের প্রকল্পগুলির সুবিধা পাচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরে গর্বিত। সোরেন বলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার করা হচ্ছে। গোটা দেশ দেখছে হেমন্ত সোরেনের প্রতি কতটা অবিচার করা হয়েছে। যে জমি চুক্তির অভিযোগ করা হচ্ছে, ওই সম্পত্তি তাঁর নামে নেই। তারপরেও তাকে জেলে পাঠানো হচ্ছে। যখনই কোনও আদিবাসী ব্যক্তি সরকার চালায়, তখনই সেই সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়’।